শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৭ ১৪৩১

নিউইয়র্কে শামীম ওসমান লাঞ্ছিত

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৪ জুলাই ২০২৩  


# গাড়িতে শামীম ওসমানকে দেখেই ভুয়া ভুয়া বলে চিৎকার
# শামীম ওসমানের সামনেই শুরু হয় হাতাহাতি

নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা ও সংসদ সদস্য শামীম ওসমান মানেই চমক। কি দেশে কিংবা বিদেশে নানা চমকদার ঘটনার মুখোমুখি হয়ে খবরের পাতার শিরোনাম হন তিনি। তার খেলা হবে ডায়লগ তো দেশের গÐি পেরিয়েছে ভারতের নির্বাচনী নেতাদের মুখে ঝড় তোলে। পরে খেলা হবে ডায়লগ গিয়ে আশ্রয় নেয় বলিউডের অভিনেত্রীর মুখে।

 

 

এবার দেশের বাইরে সূদূর আমেরিকায় পাড়া দিয়েই আবারো ভাইরাল এমপি শামীম ওসমান। আমেরিকার ভিসা নীতি ঘোষণার পরপরই শামীম ওসমানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ আমাদের অর্থনীতির ইমিরেটাস সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান সময় টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানে জানান, আমেরিকার ভিসা নীতির লঘু সাংশনের মধ্যে শামীম ওসমানের আমেরিকার ভিসা বাতিল হয়েছে।

 

 

এই ঘটনা তখন দেশ বিদেশে ঝড় তোলে। শামীম ওসমান জানান, তার ভিসার মেয়াদ আছে। মাত্র দুদিন আগে আমেরিকায় সস্ত্রীক পা রাখেন তিনি। তবে সেখানে গিয়েও অস্বস্তিকর ঘটনার মুখোমুখি হন। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) বাংলাদেশের সময় বেলা সাড়ে ১২টার সময় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে প্রবাসী বাঙালিদের কয়েকজনের হাতে তার লাঞ্ছিত হওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

 


ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে নিয়ে তার সামনে নানা বিদ্রæপ মন্তব্য করেন বিএনপির সমর্থকরা। এসময় প্রবাসীদের কাছে তিনি লাঞ্ছনার শিকার হন। একই সাথে সাংসদ শামীম ওসমানকে দেখে ভুয়া ভুয়া বলে চিৎকার করতে থাকে।

 

 

ঘটনার এক পর্যায়ে আমেরিকার প্রবাসী বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাদের কথা কাটাকাটির মধ্যেই হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এছাড়া আরও বিরূপ নানা মন্তব্য করতে শোনা যায়। এই ঘটনাটির নানান ভিডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তবে শামীম ওসমান সমর্থকদের দাবী পুরো বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত।

 


ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, জ্যাকসন হাইটসের বাঙালী পাড়ায় বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সাথে দেখা করতে যান শামীম ওসমান। ব্যবসায়ীদের অনুরোধে তিনি চা বিরতির জন্য গাড়ি থেকে নামার সময় তাকে ভূয়া ভুয়া বলে স্লোগান দিতে থাকেন দুই একজন প্রবাসী। পরে শামীম ওসমান গাড়ি থেকে নেমে স্লোগান দেয়া ব্যক্তিদের নিকটে যান এমপি শামীম ওসমান।

 

 

এসময় ভিডিওতে তাকে বলতে দেখা যায় আমার নাম শামীম ওসমান। আমার উপর বোম বাষ্ট হয়েছে। এক প্রবাসীকে তিনি বলেন, তুমি আমেরিকায় থেকে মনে করোনা, এখানকার সব তোমার। তোমার পোষ্ট যে পর্যন্ত নাই তার চাইতে হাজার উপরের পোষ্ট আমার আছে। তখন ওই প্রবাসী এই প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধিকে বলেন, আপনি আমাদের হুমকি দিলেন।

 

 

আপনারাতো আমাদের কথা বলার অধিকার দেন না। বাংলাদেশে আমরা কথা বলতে পারি না। আমেরিকার মত দেশে যদি কথা বলতে না পারি তাহলে কোথায় কথা বলবো। বিএনপি সমর্থিত প্রবাসিদের উদ্দেশ্যে শামীম ওসমান বলেন, এমন কোন কর্ম করবানা যাতে তোমার বাবা মার নাম নষ্ট হয়।

 

 

ভিডিওর ২ মিনিটের পরে দেখা যায় শামীম ওসমানের সাথে থাকা বন্ধু ও সমর্থকদের এবং বিএনপি সমর্থক প্রবাসীদের মাঝে হাতাহাতি হয়। এমনকি সাংসদ শামীম ওসমানকে ধাক্কা দিতে দেখা যায়। তিনি নিজেও একজনকে বলতে শোনা যায় তিনি বলেন, আমার গায়ে ধাক্কা দিছে।

 

 

তখনি উভয় পক্ষের মাঝে হাতহাতির ঘটনা ঘটে। যদিও এরপরপরই শামীম ওসমানকে তার বন্ধুরা পাশে নিরাপদে নিয়ে আসেন। কিন্তু তখনও প্রবাসীদের দুই গ্রুপের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা চলছিল।

 


এদিকে  তার আগে শামীম ওসমানের গাড়ি দেখে বিএনপির কর্মীরা আবারো প্রধানমন্ত্রী ও শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে কটূক্তি করে নানা স্লোগান দেন। পরে আওয়ামী লীগ বিএনপি প্রবাসী সমর্থকরা বিবাদে জড়িয়ে পরেন। তবে দলীয়ভাবে প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমান সেখানে শিষ্টাচার ও ধৈর্য্যরে পরিচয় দিয়ে তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেন বলে জানান সেখানে উপস্থিত কয়েকজন।

 


শামীম ওসমান তাদেরকে বলেন, দলকে এত ভালোবাসলে সাহস করে দেশের মাটিতে গিয়ে শ্লোগান দাও তোমরা। এমন কিছু করা উচিত নয়, যাতে নিজের বাবা-মায়ের সম্মান হানি হয়। আমি প্রতিটি টক শোতে বলি যাদের বাবা মা আছে তাদের উচিত সবার আগে বাবা মায়ের প্রতি দায়িত্ব পালন করা। সে যে দলই করুক না কেন।

 


এসময় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের নিবৃত্ত করেন। একই সাথে সেখান থেকে উভয় পক্ষের লোকজনদেরকে সরিয়ে দেয়া হয়। পরে আমেরিকা প্রবাসী সাবেক যুবলীগ নেতা মিঠু তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন অজ্ঞাত বিএনপির সমর্থরা।

 

 

শামীম ওসমান সেখানে আসবেন এখবর আগে থেকেই জানতে পেরে এই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে বলে দাবী শামীম ওসমান সমর্থকদের। সেখানকার স্থানীয় সূত্র জানিয়েছেন, ওই যুবকরা সেখানে থাকনে না।  এন.হুসেইন রনী /জেসি