শনিবার   ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ১৪ ১৪৩১

নিরাপদ খাদ্য দিবস কড়চা-২০২২

করীম রেজা

প্রকাশিত: ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২  

গতকাল ২ ফেব্রুয়ারি ছিল ‘নিরাপদ খাদ্য দিবস’। ২০১৩ সালে দেশে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আইন তৈরি হয়, আর ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। এর একদিন পর ২ ফেব্রুয়ারি নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বিষয়ক গেজেট প্রকাশ করা হয়।

 

“ জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য”- রূপকল্প ভিত্তি করে কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়। কাজীর গরুর মত গোয়াল শূন্য রেখে তাদের কার্যক্রম চলছে। এখন পর্যন্ত জনবল, গবেষণার উপযুক্ত ল্যাবরেটরি, পরীক্ষা কার্যক্রম চালানোর মত বিশেষজ্ঞ ইত্যাদি সংকট নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কর্তৃপক্ষ অনেকটা নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানরূপে অস্তিত্ববান। কিছু অভিযান পরিচালনা আর মামলার মধ্যেই বলা যায় তাদের কার্যক্রম বর্তমানে সীমাবদ্ধ। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কোন কার্যক্রম যেমন নেই, তেমন নেই কোন অফিস দপ্তরও।

 

নারায়ণগঞ্জের অবস্থা বিবেচনায় দেখা যায়, নিরাপদ খাদ্য কিভাবে পাওয়া যায়, কারা, কোথায়, কীভাবে তা নিশ্চিত করে, তা কেউ জানে না। জাতীয় পর্যায়ের অবস্থাও তথৈবচ । শীতলক্ষ্যা নদীর পানি দূষিত, অব্যবহারযোগ্য আজ বহুদিন যাবত। নদীর দুই পাড়ে বিশাল জনগোষ্ঠীর বসবাস। খাদ্য উৎপাদনসহ দৈনন্দিন প্রয়োজনে নিরুপায় হয়ে স্থানীয় মানুষ এই দূষিত পানি ব্যবহার করতে বাধ্য। দ্বিগুবাবুর বাজার বৃহত্তম পাইকারি বাজার।

 

এখান থেকে সবজি তরিতরকারি কিনে শহরের বাইরে বিভিন্ন প্রান্তে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নিয়ে যায়। মালামাল নিয়ে নদী পারাপারের সময় বস্তাবন্দি সবজি, তরকারি শীতলক্ষ্যার নষ্ট, দূষিত পানিতে চুবিয়ে নেয় তাজা রাখার মহৎ উদ্দেশ্যে।

 

সেই সবজি, শাকপাতা ব্যবসায়ীরা দোকানে বা ভ্যানগাড়িতে করে বিক্রি করেন। স্বাস্থ্য সম্মত কিনা, খাদ্য উপযোগী কিনা, নিরাপদ খাদ্য কিনা, তা দেখার যেমন কেউ নেই, নেই বিকল্প কোনো ব্যবস্থাও। একই সমস্যা রয়েছে মাছ, মাংস, বেকারি কিংবা রেস্তোরার রান্না করা খাবারের ক্ষেত্রেও। উপাদান, উপকরণ, প্রক্রিয়া কিংবা কিংবা পুষ্টিমানের কথা আলোচনার কোনও সুযোগই নেই।

 

হোটেলগুলো আগের দিনের অবিক্রিত রান্না খাবার পরের দিনের খাবারে মিশিয়ে বিক্রি করে; এমন কথা বাজারে চালু থাকলেও ভোক্তার পক্ষে সত্য-মিথ্যা নিরূপন করা কঠিন।  মূলত নিরাপদ খাদ্যের ধারণা এখনো পর্যন্ত কাগজে-কলমেই লিপিবদ্ধ। বছরে একবার একটি দিবস উদযাপনেই সব কার্যক্রম নিহিত। এতে সরকারী কোষাগারের ব্যয়সহ আমলাদের সুবিধা বেড়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভোক্তার স্বাস্থ্য রক্ষায় নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে অথবা জনখাদ্য সংস্কৃতি উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখছে বলে সমাজে দৃশ্যমান নয়।

এই বিভাগের আরো খবর