বৃহস্পতিবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২০ ১৪৩১

পতনের পর এখনো টাকার ভাগ পান শামীম ওসমান-অয়ন ওসমান

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৪ ডিসেম্বর ২০২৪  

এ যেন রূপকথাতেও হার মানায়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগষ্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশকে স্থিতিশীল করতে কাজ করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অথচ নারায়ণগঞ্জে এখনও সরব কুখ্যাত ওসমান পরিবারের দোসররা। বিশেষ করে গডফাদার শামীম ওসমান তাঁর পুত্র অয়ন ওসমানের গড়া কালো সাম্রাজ্য থেকে এখনো নানা উপায়ে এখনো অর্থ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে তাদের হাতে। সরকার পতনের মাত্র চার মাসের মাথায় জেলা যুবদলের সদস্যসচিব মশিউর রহমান রনির বিদেশ সফর নিয়ে যুগের চিন্তার অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় বিষয়টি প্রকাশ পায়। এতে সারাদেশে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ছাত্রলীগ দুই নেতা রিয়াদ ও রাফেলের সাথে ঝুট ব্যবসা, ইন্টারনেট ও ঠিকাদারীসহ ওসমানদের নেতৃত্বাধীন ব্যবসার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে যুবদল নেতা মশিউর রহমান রনির দফায় দফায় বৈঠকের বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর ক্ষুব্ধ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা ব্যাপক ক্ষোভ ঝেড়েছেন মশিউর রহমান রনির উপর। তারা সোনার খনি হিসেবে কুখ্যাতি পাওয়া ফতুল্লা বিসিক, মাসদাইর, ইসদাইর এলাকায় ওসমানদের নিয়ন্ত্রণাধীন ঝুটব্যবসা, ইন্টারনেটসহ সকল ব্যবসার ব্যাপারে প্রশাসনকে খতিয়ে দেখার জোর দাবি জানিয়েছেন। 

 

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের গডফাদার হিসেবে খ্যাত বিতর্কিত নেতা ও সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানের দুই ক্যাডার মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাইল রাফেল প্রধানের সাথে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির মালয়েশিয়ায় বৈঠকের বিষয়টি সারা দেশব্যাপী আলোড়ন তৈরি করেছে। গত ৫ আগষ্ট হাজারো ছাত্র-জনতার লাশের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারি সরকারের পতনে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হলেও বিগত দিনের সেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের প্রেতাত্মারা কিছু নাম সর্বস্ব। গডফাদার শামীম ওসমান তার ছেলে অয়ন ওসমান এবং ভাতিজা আজমেরী ওসমানের ক্যাডার হিসেবে খ্যাত দুই ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ ও রাফেলের আত্মীয়তার সুবাদে ভাই যুবদল নেতা মশিউর রহমান রনি সেই ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রেতত্মাদের বিগত দিনে পাওয়া অর্থগুলো আবারো তাদের ভান্ডারে পৌঁছে দিচ্ছেন। এ নিয়ে বিশ^য় যুগের চিন্তার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পর সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যাকে ঘিরে স্থানীয়সহ জেলার বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষুদ্ধ। এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ছাত্র-জনতাসহ এই যুবদল নেতা মশিউর রহমান রনির উপরে ফুঁসে উঠেছে। এদিকে ছাত্র আন্দোলনের গত ১৮-১৯ জুলাই প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ছাত্র-জনতার উপরে গুলি চালনো সেই রিয়াদ-রাফেলকে প্রকাশ্যে রনি সহযোগীতা করার প্রতিবেদন বেড়িয়ে আসলে সুধিমহলে রনিকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য তৈরি হয়েছে। আর রনির এই কর্মকান্ডে নারায়ণগঞ্জের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সাথে বেঈমানী হচ্ছে বলছে অনেকেই।


জানা গেছে, মূলত বিকেএমইএ'র শীর্ষ পদে আসীন এক নেতার আশীর্বাদে রনি, তার দুই ছাত্রলীগ ভাই রিয়াদ ও রাফেলের স্থলাভিষিক্ত হন। রাফেল প্রধান বৃহত্তর মাসদাইর এলাকা থেকে বিসিক পর্যন্ত অয়ন ওসমানের নিয়ন্ত্রণাধীন জেডএন কর্পোরেশনের ইন্টারনেট লাইন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাফেল প্রধানের আপন ভাই রাসেল, আত্মীয়তার সম্পর্কে ভাই যুবদল নেতা মশিউর রহমান রনি শেল্টারে বর্তমানে হাতবদলের মাধ্যমে সেটি পরিচালনা করে আসছেন। জেডএনের বেশ কিছু ইন্টারনেট লাইন হাতছাড়া হলেও রনির কল্যানে এগুলো অক্ষত আছে। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার লাইনে ১৫ লাখ টাকার বেশি এই খাতে আয় হচ্ছে বলে জানিয়েছে সূত্র। তাছাড়া রিয়াদ ও রাফেলের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঠিকাদারীর পদ্ধতি, অন্যান্য উৎস থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আয়ের পদ্ধতি এবং বিসিক এনায়েনগর ও মাসদাইর এলাকার প্রতিষ্ঠানের ঝুট নিয়ন্ত্রণ ও ভাগাভাগি প্রসঙ্গেই আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র। এনায়েতনগর ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার শাহজাহান মাতবর এবং ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার আতাউর মেম্বারের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্কের জের ধরে আওয়ামী লীগ আমলে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল রিয়াদ ও রাফেলের। পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের দোসররা পালালেও রনির শেল্টারে এখনো দুই ওয়ার্ডে আগের মতো দাপুটে এই দুই মেম্বার। সর্বশেষ চলতি বছর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬নং ওয়ার্ডে শাহজাহান মাতবরকে জেতাতে জালভোট দিতে গিয়ে ও কেন্দ্র দখল করতে গিয়ে ধরা পড়েন ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান রিয়াদ। তখন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। র‌্যাবের এক অফিসারের শক্ত অবস্থানের বিপরীতে শামীম ওসমান উপস্থিত হলে রিয়াদ বিচারের সুরে বলেন, 'কুত্তার মতো পিটাইছে”। এসময় কারণ জিজ্ঞাসা করলে র‌্যাব-১১ এর স্কোয়াড্রন লিডার এ কে এম মনিরুল আলম দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, 'ওদেরকে মারি নাই স্যার। ওরা দেখেন এসব জিনিসপত্র নিয়ে (ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোটা দেখানো হয়) আসছে। ওখানে ককটেল আছে। তারা এখানেই ছিল। আপনি সবাইকে জিজ্ঞাসা করেন।' মূলত ওই ঘটনা ছিল সেই এলাকার ফুট ও ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের জন্য ওই মেম্বারকে জেতানো অত্যাবশকীয় হয়ে পড়েছিল।


১ ডিসেম্বর যুগের চিন্তায় 'ছাত্রলীগ দুই ভাইয়ের ব্যবসা বুঝে নিতে মালয়েশিয়া যুবদল নেতা রনি' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে আবারো রোমাঞ্চর এক ঘটনা বেরিয়ে আসে। সমালোচনার মুখে পড়া জেলা যুবদলের সদস্য সচিব রনি পরবর্তীতে নভেম্বরে তার বিদেশে অবস্থানের কথা অস্বীকার করেন। তবে ২ ডিসেম্বর চারিদিকে মালয়েশিয়ায় রনির অবস্থানের বিভিন্ন ছবি ভাইরাল হতে শুরু করে, এবং যুগের চিন্তার অনুসন্ধান সত্য বলে প্রমাণিত হয়। এদিকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে উঁচুতলা ভবনের পাহাড়ি সৌন্দর্যের ভিউ নিয়ে কয়েকটি ছবি তুলেছেন মশিউর রহমান রনি, আরেকটি ছবির পেছনে লেখা কবষঁধৎ, যা মূলত একটি মালয় ভাষা, এটির অর্থ ইমার্জেন্সি এক্সিট। এখানে রনি বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের সাথে ছবি তোলেন। আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে মশিউর রহমান রনি বিখ্যাত ঘড়ির ব্র্যান্ড ঐঁনষড়ঃ এর কুয়ালামপুরের শোরুমে গিয়েছেন, সেখান থেকে ঘড়ি কিনেছেন এমনকি সেই শো- রুমে ছবিও তুলেছেন। এছাড়া সফরে মালয়েশিয়ার কুয়ালামপুর শহর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রাজায়া শহরে পিংক মসজিদের (পুত্রাজায়া উইলিয়ার প্রধান মসজিদ) এর সামনেও ছবি তুলেছেন। এছাড়া ৩০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে মশিউর রহমান কুয়ালামপুরের সহোটেল প্যাভিলিয়নে গিয়েও তার শুভানুধ্যায়ীদের সাথে স্বাক্ষাৎ করেছেন। এদিকে গোটা মাসদাইর এলাকা এবং রনির শুভানুধ্যায়ী সবাই গত ১০দিনেরও বেশি সময় ধরে মশিউর রহমান রনির বিদেশ সফরের কথা জানলেও রনি তা অস্বীকার করছেন। তিনি বলছেন, তিনি গত ১০দিন ধরে লালমনিরহাট ছিলেন। তবে কয়েকটি পত্রিকায় ইন্টারভিউতে রনি দাবি করেছেন তিনি কোথাও যাননি, তিনি নারায়ণগঞ্জেই ছিলেন।


তবে ১ ডিসেম্বর দুপুরের পর যুবদল নেতা রনির দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, স্যার দেশের বাইরে থেকে একটু আগে ফিরেছেন, বাসায় ফিরে রেস্ট করছেন। এছাড়া মশিউর রহমান রনির কর্মী ও পরিচিতজনদের সাথে দেখা হলেই বলছেন, তার ভাই (মশিউর রহমান রনি) বিদেশ থেকে ফিরেছেন। অনেক চকলেট এনেছেন, পেয়েছেন কিনা?


মশিউর রহমান রনির অত্যন্ত ঘনিষ্ট বেশ কয়েকজন জানান, ১ ডিসেম্বর দুপুর ১টার আগে গত ১০দিনের বেশি সময় পর্যন্ত রনি কারো সাথে বাংলাদেশী মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা মেসেঞ্জারে সবার সাথে কথা বলেছেন। ১ ডিসেম্বর যুগের চিন্তায় সংবাদ প্রকাশের পর তড়িৎ গতিতে দেশে ফিরে আসেন মশিউর রহমান রনি। যুগের চিন্তায় যেদিন সংবাদ প্রকাশ হয়েছে সেদিন সকালেই কুয়ালামপুর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা করেন রনি। তারা বলেন, মালয়েশিয়ার কুয়ালামপুর থেকে বাংলাদেশের ঢাকা আসতে ননস্টপ ফ্লাইটে সময় লাগে মাত্র ৩ ঘন্টা ৫৫ মিনিট থেকে ৪ ঘন্টার মতো। দেশে ফিরেই রনি এয়ারপোর্ট থেকে সোজা দৈনিক যুগের চিন্তা কার্যালয়ে আসেন দুপুর ৩টার পর। এছাড়া তিনি ফোনে জানান, 'তিনি মাত্র লালমনিরহাট থেকে ফিরেছেন, গত ১০দিন তিনি লালমনিরহাট অবস্থান করছিলেন। এসময় তিনি বের হয়ে যাওয়ার সময় রাগে গজগজ করতে দেখে নেওয়ার হুমকি দিতে দিতে সিড়ি দিয়ে নেমে যান। তবে রাতে আবারো যুগের চিন্তা অফিসে এসে বিদেশে যাওয়ার কথা অস্বীকার করেন রনি।


এদিকে যুগের চিন্তায় সংবাদ প্রকাশের পর রনির মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত ছবি ভাইরাল হয়। রনি কখনো লালমনিরহাট ছিলেন, কখনোবা মাসদাইরের বাসায় ছিলেন এসব কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। মালেয়শিয়ায় অবস্থানরত ছবিগুলোর বিষয়ে মশিউর রহমান রনির কাছে জানতে চাইলে তিনি যুগের চিন্তাকে বলেন, এই সকল ছবি তো থাইল্যান্ডের ছবি! এগুলো পুরনো ছবি, হঠাৎ করে সামনে আসলো কি করে? তিনি জোর দিয়ে বলেন, তিনি দেশের বাইরে যাননি।'


এদিকে রাজনীতিক নেতৃবৃন্দ বলছেন, মাত্র দুইদিন আগের বিষয় যেহুতু ইমিগ্রেশন থেকে রনির দেশের বাইরে যাওয়ার তথ্য জানাটা দূরুহ কোন বিষয় নয়। বিদেশে ভ্রমণ কিংবা জরুরি প্রয়োজনে যে কেউ যেতেই পারেন, তাহলে রনি কেন বিষয়টি নিয়ে জল ঘোলা করছেন? আত্মীয়তার সুবাদে ৫ আগস্ট পতনের পর পালিয়ে যাওয়া মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও তোলারাম কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ আর সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাইল রাফেল প্রধানের সাথে যোগাযোগও হতে পারে। তবে এটি নিয়ে কেন লুকোচুরি করছেন তিনি? জানতে চাইলে যুবদল নেতা রনি যুগের চিন্তাকে বলেন, “তারা আমার ভাই না, তারা শামীম ওসমানের কর্মী। এরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল।'


এছাড়া তিনি বলেন, ‘আমি দেশের বাইরে নভেম্বর মাসে যাইনি। তবে ডিসেম্বরে যাবে ভ্রমণে। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং চায়না ভ্রমণের জন্য আমার পাসপোর্ট জমা দিয়েছি। আশা করছি ডিসেম্বরের শেষে এই তিনটি দেশ ঘুরতে যেতে পারবো।'


এদিকে গত ৫ মাসের মধ্যে অনেকটাই ফুলে ফেঁপে উঠেছে এই যুবদল নেতা রনি। বর্তমানে আওয়ামীলীগের দোসর বিকেএমইএ'র শীর্ষ পদে আসীন এক নেতার বদৌলতে যুবদল নেতা রনি  তার ক্লিন ইমেজ রেখে তার লোক, ভাই, ভাগিনাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করিয়ে থাকেন বিসিকের বেশির ভাগ গার্মেন্টস। এর মধ্যে তামাই গার্মেন্টস, এবি এফ, নিহাম, ফকির এপারেলস, এলোবেডিট, ওয়েভটেক্স, খাতুন, এবি। 

 

এ ছাড়া ও আরো বড় বড় একাধিক গার্মেন্টসের নিয়ন্ত্রণ এখন মশিউর রহমান রনির বদৌলতে তার লোকদের দখলে এ ছাড়া মাসদাইরের ফারিয়া গার্মেন্টস, সেঞ্চুরী গার্মেন্টস, আমানা গার্মেন্টস, শোভন গার্মেন্টসসহ এমন আরো বেশ কয়েকটি গার্মেন্টস ও তার ভাগিনা সাবেক ছাত্রলগি নেতা সিফাত এবং এনায়েতনগর ইউনিয়ন ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি জুম্মান ও তার বাবা জিলানীর দখলে বিসিক মাসদাইর জুড়ে বহু নিটিং জিম্মি করে রেখেছে বলে জানা গেছে। এদিকে তার লোক হিসেবে বিসিক ও মাসদাইর জুড়ে কাজ করছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক পাইলিং জাহাঙ্গীর, এনায়েতনগর ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, রাজনীতি না করে ও মাসদাইরের সকল অপকর্মের প্রকাশে ও গোপনের শেল্টারদাতা রনির বড় ভাই শেখ রুবেল, সেলিম, শহীদ, মিজানসহ আরো বেশ কয়েকজনের মাধ্যমেই সব নিয়ন্ত্রণ করেন এই যুবদল নেতা রনি। এ দিকে বিগত দিনে তার আওয়ামী লীগের আত্মীয় স্বজন যা করেছেন এখন তাদের থেকে ব্যবসাসহ সকল কৌশল বুঝে নিয়ে যুবদল নেতা রনি সব নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টায় রয়েছেন। তা ছাড়া যথাযথ ভাগ ও তার ছাত্রলীগের ভাইদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা ও করে রেখেছেন এই যুবদল নেতা রনি। এদিকে এর আগের সেপ্টেম্বরের ২৯, ৩০ এবং অক্টোবরের ১ তারিখে ছাত্রলীগ নেতা রাফেল ও রিয়াদকে মালয়েশিয়ার কুয়ালামপুরে হাংতুয়া এলাকায় দেখা যায় যা রীতিমতে অনেকটাই ভাইরাল হয়। আর বর্তমানে রনি তার ছাত্রলীগ ভাইদের সাথে ব্যবসায়ী মিটিংয়ের উদ্দেশ্য মালয়েশিয়া যাওয়ার ছবি ভাইরাল।


এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ¦ মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘আন্দোলন সংগ্রামে অনেক ত্যাগের বিনিময়ে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে আজকে আমরা এই অবস্থায় আছি। স্বৈরাচারের সাথে যারা ছিলো তাদের সাথে যেই এখন আতাঁত করবে আর নিজের স্বার্থের জন্য তাদের ও বেনিফিটেড করবে এটা কোনভাবেই আমরা মেনে নিবো না। এটা হবে শাস্তিযাগ্য অপরাধ।’


তিনি বলেন, ‘যদি এমন কেউ করে থাকে আর তার প্রমান আমরা পাই তাহলে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দল থেকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তা না তাহলে আজকে ছাত্র-জনতার জীবন বিসর্জন দিয়ে যে স্বৈরাচারের অবসান ঘটানো হয়েছে সেটার সাথে বিশ^াসঘাতকতা করা হবে।’


বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘যদি এমন কিছু হয়ে থাকে দল তদন্ত করে তার বিচার করবে।’


মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘আপনারা সাংবাকিররা পারেন না এমন কিছু নাই। আপনারা সাংবাদিকরা সত্যটা খুঁজে বের করে সংবাদ প্রকাশ করবেন। তার পরবর্তীতে যদি দলের তদন্তে তা প্রমাণ হয় তা হলে অবশ্যই দল তাঁর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।


বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘যদি কেউ আওয়ামী লীগের সাথে আতাঁত করার চেষ্টা করে থাকে আর তার প্রমাণ থাকে তাহলে অবশ্যই দলীয় হাইকামান্ড তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।’


ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু যুগের চিন্তাকে বলেন, যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তা অনেকটাই দুঃখজনক বিষয়।


ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বারী ভূঁইয়া যুগের চিন্তাকে বলেন, আমি রনির এ বিষয়ে কোন প্রকারের অবগত না। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তা হলে সেটা অনেকটাই দুঃখজনক।


এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু।
 

এই বিভাগের আরো খবর