রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪   ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

প্রতিকূলতা নিয়েও চিকিৎসা সেবায় অনন্য তিন’শ শয্যা হাসপাতাল

তানজিলা তিন্নি

প্রকাশিত: ৬ জানুয়ারি ২০২৪  

 

# নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা মানুষকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবাটি দেয়ার চেষ্টা করি : তত্ত্বাবধায়ক 

 

 

নারায়ণগঞ্জ খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতাল চিকিৎসা সেবায় অনন্য দৃষ্টিস্থাপন করছে। নারায়ণগঞ্জ এর এই সরকারি হাসপাতালে প্রতিদিন ১৫’শ থেকে ১৮’শ মানুষ চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে। এই হাসপাতালে সব ধরনের স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি ২৪ ঘন্টা জরুরি বিভাগের সেবার কাজ চালু থাকে।

 

সরকারি ছুটি ব্যতীত প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা রোগীদের জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকেন হাসপাতালের চিকিৎসকগণ। হাসপাতালে চিকিৎসকদের সেবা নেওয়ার পর রোগীরা ডাক্তাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ থাকেন। পাশাপাশি এলাকায় অনেকেই এই হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার নানা ধরনের ভালো মন্তব্য করে থাকেন।

 

হাসপাতালের পরিবেশ ও যথেষ্ট মনোমুগ্ধকর। হাসপাতালটি ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হলেও আগামী জুন মাসে এটি ৫০০ শয্যা করার পরিকল্পনা আছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। হাসপাতালের খাবার দাবার যথেষ্ট ভালো মানের। সরকারি নির্ধারিত টাকার মধ্যে প্রতিদিন রোগীদের ভালো খাবার দেওয়ার চেষ্টা করেন তারা। সকালে খাবারে রুটি, কলা ও ডিম থাকে, যারা এটা খেতে পারে না তাদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা থাকে।

 

দুপুরে মাংস অথবা মাছ ভাজি, ডাল দেওয়া হয়ে থাকে রোগীদের রাতেও তাই। হাসপাতালের সরকারি এ্যাম্বুলেন্স আছে ৫টি। এগুলো সব গুলোই নিয়েজিত আছে রোগীর সেবায়। তবে হাসপাতালের কিছু দালালের খপ্পরে পরে রোগীরা প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করেন। যার ফলে বাড়তি টাকা ব্যয় হয় রোগীদের।

 

হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগে চিকিৎসাধীন আলেয়া বেগম হাসপাতালে পরিবেশ সর্ম্পকে যুগের চিন্তাকে জানান, আমি এখানে আশার পর থেকে ডাক্তার ও নার্সদের কাছ থেকে ভালো ব্যবহার পেয়েছি। তারা আমার যেকোনো দরকারে সর্বক্ষণ সাহায্য করেছেন। এখানে আমার সরকারি ওষুধ দেওয়া হয় যার ফলে আমার বাহির থেকে ওষুধ বেশি একটা কিনতে হয় না। আর পরিবেশ ও মানসম্মত। নারায়ণয়ঞ্জে সরকারি হাসপালে এমন অনন্য চিকিৎসা পাওয়া যায় তা জানা ছিল না।

 

হাসপাতালে বহির্বিভাগে ঠান্ডার রোগ নিয়ে আসা আর এক রোগী আফজাল বলেন, আসছি এখানে শুনছি কম টাকায় ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায়। আমি তো প্রাইভেট ডাক্তার দেখানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আমার এলাকার একজন ভাই আমাকে বললেন যে খানপুর হাসপাতালে যান সেখানে ভালো চিকিৎসা পাবেন সাথে ওষুধ তারা দিয়ে দিবে। তাই এখানে এসেছি। আর ডাক্তার দেখালাম এখানের ডাক্তাররা খুব সুন্দর ব্যবহার করেণ, কিছু না বুঝলে বুঝিয়ে দেন। আমার ভালো লেগেছে হাসপাতালের পরিবেশ। সরকারি হসপাতালের পরিবেশ এতোটা ভালো হয় তা জানা ছিল না।  

 

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের সাথে হাসপাতাল নিয়ে নতুন কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের নতুন পরিকল্পনা আছে। আগামী ৩০শে জুন হাসপাতাল ৩০০ শয্যা থেকে ৫০০ শয্যায় হস্তান্তর করার পরিকল্পনা আছে। সেভাবেই কাজ চলছে। এটা হস্তান্তর করার পর আমরা সচিব স্যারের সাথে কথা বলেছি। আমি নিজে চিঠি দিয়েছিলাম। আমাদের হাসপাতালে কার্ডিওলজি বিভাগ নাই,  কিডনি আর ব্রেন এর চিকিৎসাও এখানে হয় না কারণ এসব বিভাগ এখানে নেই। তৈরি হয় নি কখনো।

 

পুরো নারায়ণগঞ্জেই এই রোগের চিকিৎসা হয় না। এ তিনটি বিভাগ আমাদের খুবই দরকার আমাদের হাসপাতালটি ৫০০ শয্যা হলে আমরা এই বিভাগ গুলো চালু করতে পারবো। এসবের বাইরে যে বিভাগ গুলো আছে সেগুলো চলমান আছে। যেমন, গাইনী, পেডিয়াট্রিক, মেডিসিন, সার্জারি, নাক কান গলা, চোখ, কার্ডিওলজি, প্যাথলজি এসব বিভাগের চিকিৎসা আমাদের এখানে চলামান আছে। সেবার ব্যাপারটা সব বিভাগের সেবা চলমান আছে আমাদের হাসপাতালে কোনো রোগী আসলে এক কথায় চিকিৎসা বিহীন ফিরে যেতে হয় না।

 

তিনি আরো বলেন, হাসপাতাল ৫০০ শয্যা হওয়ার পর যে তিনটি বিভাগ নেই এগুলো চালু করার জন্য এপলিকেশন করবো, আবার জনবল বাড়ানোর জন্য আমরা তাকে জানাবো। এখন আমাদের কাছে ৫০০ শয্যার কাঠামো হস্তান্তর করা হবে। তার আগে আমরা কিছু করতে পারবো না। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী জুনে আমাদের ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সেবা আমরা চালু করতে পারবো। আমরা হাসপাতালের পরিবেশ নিয়ে কাজ করবো সামনে গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করবো।

 

আর প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আছে এবং অন্যান্য সরঞ্জামের জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি, হাসপাতালে দামি জিনিস পত্রতো আমরা কিনতে পারি না এটা মন্ত্রনালয় থেকে কিনা হয় ডিসি অফিসের মাধ্যমে। আমরা ৫০০ শয্যার জন্য সব তৈরি করছি আমরা এগুলো পাঠাবো তাদের কাছে। এটাই আমাদের পরিকল্পনা। ২০২৪ সালে যেকোনো রোগী নারায়ণগঞ্জ থেকেই সব ধরণের সেবা পাবে কাউকেই কষ্ট করে ঢাকায় যেতে হবে না। আমরা চেষ্টা করছি রোগীদের আরো মানসম্মত চিকিৎসা প্রদান করার। আমরা আরো কিছু সুবিধা ও সহযোগিতা পেলে আরো ভালো সেবা দিতে পারবো। এস.এ/জেসি
 

এই বিভাগের আরো খবর