মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

ফতুল্লায় গ্যাসের বকেয়া বিল ৩০৮ কোটি টাকা!

যুগের চিন্তা অনলাইন

প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২১  

নারায়ণগঞ্জে শিল্পাঞ্চল হিসেবে সর্বত্র খ্যাতি রয়েছে ফতুল্লা থানা এলাকার। জেলার অন্যান্য থানার তুলনায় এই অঞ্চলে ঘনবসতিও রয়েছে বেশ। ফলে আবাসিক ও বাণিজ্যিক হিসেবে এই এলাকাটিতে গ্যাসের বৈধ গ্রাহকের সংখ্যাও কম নয়। অবাক করা তথ্য হলো, কেবল ফতুল্লা থানা এলাকার মধ্যেই আবাসিক ও বাণিজ্যিক উভয় ধরনের গ্রাহকদের কাছেই জমে আছে ৩০৮ কোটি টাকার বকেয়া বিল।

 

এমনটাই জানিয়েছেন, তিতাসের নারায়ণগঞ্জ কার্যালয়ের ডিজিএম মো. গোলাম ফারুক। দৈনিক যুগের চিন্তাকে তিনি বলেন, ‘কেবল ফতুল্লা জোনের মধ্যে আবাসিক ও বাণিজ্যিক মিলিয়ে বকেয়া বিল জমে আছে ৩০৮ কোটি টাকা। আমরা বরাবরই বকেয়া বিল আদায়ের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কোন প্রতিষ্ঠান আবাসিব গ্রাহকের মাত্রাতিরিক্ত বিল জমে গেলে আইন অনুসারে আমরা তা বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছি। বিচ্ছিন্ন করার পর পূনঃসংযোগ স্থাপনের বিধি অনুযায়ী বিল পরিশোধ বা শর্তাবলী মানার মধ্যদিয়ে গ্রাহকরা পূনরায় সংযোগ পাচ্ছেন। বকেয়া বিল আদায়ের জন্য আমাদের হেড অফিস থেকেও কড়া নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী আমাদের সংশ্লিষ্ট স্টাফ বা কর্মকর্তারা কাজ করে যাচ্ছেন।’

 

এদিকে, বকেয়া বিল আদায়ে তিতাস কর্মকর্তারা কাজ করছেন বলে জানানো হলেও মাঠ পর্যায়ে এখনো ৩০৮ কোটি টাকার বকেয়া বিল জমে থাকায় তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন সচেতন মহল। তিতাস অফিসের একটি সূত্র জানায়, আবাসিক গ্রাহকদের তুলনায় বাণিজ্যিক গ্রাহকদের কাছে গ্যাসের বকেয়া বিল জমে আছে ঢের বেশি। বাণিজ্যিক গ্রাহকদের অনেকেই বিভিন্ন ভাবে ম্যানেজ করে বকেয়া বিল মাথায় নিয়েই দিব্যি গ্যাস ব্যবহার করে যাচ্ছে। একই ভাবে অনেক প্রভাবশালী আবাসিক গ্রাহকরাও গ্যাসের বকেয়া বিল জমিয়ে রেখেছেন বলে তিতাসের সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।

 

বিগত দিনে দেখা গেছে, তিতাসের কর্মকর্তারা গ্যাসের বকেয়া বিল উদ্ধারে গিয়ে প্রভাবশালীদের দ্বারা নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মূখিনও হচ্ছেন। সম্প্রতি ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকায় চাঁদ ডাইং নামক একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বকেয়া বিল উদ্ধারে গিয়ে বকেয়া বিল আদায় করতে না পারায় গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার সময় ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ ও স্থানীয় একটি মহলের দ্বারা শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত ও অবরুদ্ধ হয়েছিলেন। পরবর্তীতে থানা পুলিশের সহায়তায় তিতাসের কর্মকর্তাদের উদ্ধার করা হয়েছিলো।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, তিতাসের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বকেয়া বিল উদ্ধার বা বকেয়ার জন্য সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে প্রায় সময়ই তারা এমন ঘটনার সম্মূখিন হন। বিশেষ করে মিল ফ্যাক্টরীর মালিক, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও তাদের সহযোগিদের দ্বারাই ঘটছে এমন ঘটনা। তাই অনেক ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ প্রশাসনের সহায়তায় অভিযানে যেতে হয় তিতাস কর্তৃপক্ষকে।
 

এই বিভাগের আরো খবর