শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

বটতলা রেললাইনের সালেহীন ফেব্রিক্সে সর্বনাশ স্থানীয়দের

সাইমুন ইসলাম

প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

 

ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্গত ফতুল্লার বটতলা রেললাইন সংলগ্ন পোষ্ট অফিস রোডে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে সালেহীন ফেব্রিক্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান। সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, যে যায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছে এই প্রতিষ্ঠান এর কারণে আশেপাশের অবস্থা একেবারে শোচনীয়। মারাত্মক পরিবেশগত সংকটে পড়েছে সালেহীন ফেব্রিক্স সংলগ্ন এলাকা।

 

শুধু তাই নয় এ প্রতিষ্ঠান হতে নির্গত তরল বর্জ্য মারাত্মক বিষাক্ত। এই বিষাক্ত তরল বর্জ্য কোনো রকম পরিশোধন ছাড়াই সরাসরি পাশের খালে গিয়ে পড়ছে। কারণ এই প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো ইটিপি। যার কারণে ঐ অঞ্চলের পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। শুধু পানি দূষণই নয়। এই প্রতিষ্ঠানের কারণে বায়ুদূষণের মাত্রাও নেহাৎ কম নয়। অনুসন্ধানে জানা যায় এ প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে। এ ছাড়াও অতাবশ্যক ইটিপি প্রনালী নেই এই প্রতিষ্ঠানে।

 

তথ্য নিয়ে জানা যায়, এই প্রতিষ্ঠানটি জ্বালানী হিসেবে গ্যাস ব্যবহার করছে। তবে অবৈধ প্রতিষ্ঠান হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ার পরও কিভাবে গ্যাস সংযোগ রয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলাই যায় কারন অবৈধ প্রতিষ্ঠানের গ্যাস সংযোগ পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে কেটে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান। আবার কেউ কেউ বলছে এ সংযোগটি বৈধ নাকি অবৈধ তা যাচাই করে দেখা উচিত। এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে তারা জানান, এ ডাইংটি অনেকদিন ধরেই পরিবেশের ক্ষতি করে চলতেছে। কিন্তু কেউ এ নিয়ে কিছু বলার সাহস পায়নি।

 

এ প্রতিষ্ঠানটির দূষিত বিষাক্ত পানি ইটিপি প্রক্রিয়া ছাড়াই জলাশয়ে গিয়ে জমা হচ্ছে। বর্ষা মৌসুমে মুলত ক্যামিকেল মিশ্রিত এই বিষাক্ত পানিগুলোই রাস্তার পানির সাথে মিশে মানুষের সংস্পর্শে এসে মানুষের নানাবিধ জটিল চর্মরোগের কারন হচ্ছে। শুধু তাই নয় এ প্রতিষ্ঠানের তীব্র বায়ু দূষণের কবলে পরে শ্বাসনালীর নানাবিধ সমস্যায় ভুগছে স্থানীয়রা। অর্থাৎ এই প্রতিষ্ঠানের করাল গ্রাসে উভয় সংকটে এ এলাকার সাধারণ মানুষ। এ নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই স্থানীয়দের। ক্ষোভে ফুসছে সকলে।

 

পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ইতিমধ্যে এনফোর্সমেন্টের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে। এবং এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। যা এখনো চলমান। তবে এতকিছুর পরও থেমে নেই তাদের কার্যক্রম।

 

এ নিয়ে সালেহীন ফেব্রিক্সের মালিক মমিনুল ইসলাম বলেন, এ নিয়ে ইতিমধ্যে আমাদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। যা এখনো চলমান। তবে ইটিপি ও ছাড়পত্র ছাড়াই যে এই প্রতিষ্ঠান চলছে তা স্বীকার করে নেন তিনি।

 

তবে এলাকাবাসীর দাবী অতি দ্রুত এই প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হোক এবং এলাকাবাসীকে বিশুদ্ধ বাতাস নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হোক। এ নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। এখন দেখার বিষয় পরিবেশ অধিদপ্তর কি ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
 

এই বিভাগের আরো খবর