সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৮ ১৪৩১

বন্দরের ফলাফল প্রভাব ফেলবে সোনারগাঁয়ে

যুগের চিন্তা রিপোর্ট  

প্রকাশিত: ১৬ মে ২০২৪  


২১ মে অনুষ্ঠেয় সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সদ্য সমাপ্ত বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল প্রভাব বিস্তার করতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে বিশ্লেষকদের ধারণাও ততই প্রবল হচ্ছে। প্রসঙ্গত, বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী এমএ রশিদের পক্ষে নরায়ণগঞ্জ-৪ ও ৫ আসনের এমপি যথাক্রমে শামীম ওসমান এবং সেলিম ওসমান উঠেপড়ে লেগেছিলেন।

 

 

আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির নেতাকর্মিরাও দলবেঁধে দ্বারে দ্বারে গিয়ে রশিদের জন্য ভোট চেয়েছেন। লাগাতার মিটিং মিছিল করেছেন। পাশাপাশি রশিদের প্রতিদ্বন্দ্বি দুই প্রার্থী আতাউর রহমান মুকুল ও মাকসুদ হোসেনকে প্রকাশ্যে গালাগালি, নানাভাবে হুমকি প্রদান এবং একের পর এক মামলা দিয়ে কোনঠাসা করে রাখা হয়েছিলো।

 

 

উপরন্তু প্রচারণার একেবারে শেষমুহূর্তে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মাকসুদকে রাজাকারের সন্তান তকমা দিয়ে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিলো। গত উপজেলা নির্বাচনের মতো এবারও রশিদকে ফাঁকামাঠে বিজয়ী করার নীলনকশা বাস্তবায়নের যাবতীয় উদ্যোগ নিয়েও প্রশাসন নিরপেক্ষ থাকায় শেষরক্ষা হয়নি। রশিদকে শোচনীয় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। অনেকে বলাবলি করছেন, লজ্জাজনক এই পরাজয়ের ফলে বন্দরে রশিদের রাজনৈতিক কবর রচিত হয়ে গেছে।  
 

 


এসবকথা বন্দরবাসীর মুখস্থ। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রশাসন কঠোর ভূমিকা পালন করায় সরকারি দলের নেতাকর্মিরা ফলাফল নির্ধারণে হস্তক্ষেপ করতে পারেননি। ফলে জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা মাকসুদের পক্ষেই বিজয়ের পাল্লা হেলে যায়। বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন চিহ্নিত রাজাকার রফিকের সন্তান মাকসুদ হোসেন।

 

 

তার বিজয়ে সরকারি দলের নেতাকর্মিদের গালে প্রচন্ড চপেটাঘাত পড়ে। কিন্তু এরপরও শিক্ষা হয়নি তাদের। বন্দরের মতো সোনারগাঁয়ের নির্বাচনেও তারা একজন বিতর্কিত প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে মাঠে নেমেছেন।

 


সোনারগাঁয়ের নির্বাচনি মাঠ সরেজমিন পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, চেয়ারম্যান  পদপ্রার্থী বাবুল ওমর বাবুকে সরাসরি সমর্থন জানিয়ে তার পক্ষে প্রকাশ্য প্রচারণায় নেমেছেন নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সরকার দলীয় এমপি কায়সার হাসনাত। বাবু নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িত। সোনারগাঁয়ের সাধারণ মানুষ বাবুর নাম শোনলেই আঁতকে ওঠেন।

 

 

ভোটের মাঠে তিনি একেবারেই বেমানান। অথচ যার নাম সোনারগাঁর সর্বস্তরের মানুষের মুখে মুখে সেই চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মাহফুজুর রহমান কালামকে দূরে সরিয়ে রেখে নিজেদের হীন স্বার্থ হাসিলের মিশনে নেমেছেন এমপি কায়সার হাসনাত ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা।

 

 

সরকারি উচ্চপর্যায়ে সুস্পষ্ট নিষধাজ্ঞা থাকা সত্বেও একজন দুর্নীতিবাজ প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে প্রকাশ্যে এমপির মাঠে নামাটাকে মেনে নিতে পারছেন না সাধারণ ভোটাররা। যে কারণে এমপির নির্দেশনাকেও তারা তেমন আমলে নিচ্ছেন না। নির্বাচনের দিন প্রশাসন যদি বন্দরের মতো নিরপেক্ষ ভূমিকা বজায় রাখেন তবে সোনারগাঁয়ের নির্বাচনি ফলাফলটাও বন্দরের মতোই হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।    এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর