বাবা-মায়ের সাথে ঈদে কাটানো দিনগুলো ততটা স্পষ্ট নয় : আব্দুস সালাম
প্রকাশ: ১৪ জুন ২০১৮, ০৩:৪১ পিএম
স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪): ‘ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদ মানে আড্ডা। যদিও এবার ঈদ বাসায়ই কাটাবো। ঈদের পর মেয়ের পরীক্ষা তাই বাইরে যাওয়ার তেমন কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে একটা পরিকল্পনা আছে পুরোনো বন্ধুদের একসাথে বসে আড্ডা দেয়া। আমাদের এই আড্ডাটা দীর্ঘ ৪০ বছর যাবৎ হয়ে আসছে।
ঈদে পরিবারের সাথে সময় কাটালেও পুরোনো বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা আমি কখনওই মিস করি না। ঈদ আসলেই শত ব্যস্ততা থাকলেও আমরা সকল বন্ধুরা এক সাথে হই। একসাথে খাওয়া দাওয়া আনন্দ করা হই-হুল্লড় করা হয়। যুগের চিন্তা ২৪’র সাথে ঈদ আড্ডায় ঈদের দিনের ব্যস্ততার কথা বলছিলেন এটিএনএ বাংলা ও আমাদের সময়ের নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক আব্দুস সালাম। ছোটবেলার ঈদের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আব্দুস সালাম জানান, বাবা-মায়ের সাথে ঈদে কাটানো দিনগুলো ততটা স্পষ্ট নয়। কারণ বাবা আমি যখন অনেক ছোট প্রায় চল্লিশ বছর আগে মারা গেছে আর মা পঁচিশ বছর আগে মারা গেছে। তবুও আমরা ভাইবোনরা প্রতিটি ঈদ একসাথে পালন করি।
আমাদের পরিবারের একটা নিয়ম আছে, আমরা ভাইবোনরা যে যেখানেই থাকিনা কেন যতই ব্যস্ত থাকুক না কেন ঈদের দিন সবাই একসাথে রান্না-বান্না, খাওয়া দাওয়া করা হয়। ঈদের কেনাকাটা নিয়ে জানতে চাইলে আব্দুস সালাম জানান, কেনাকাটার কথা যদি বলি এখন পর্যন্ত একটা পাঞ্জাবী কেনা হয়েছে। তবে মেয়ের জন্য কেনাকাটাটাই এখন আনন্দের। ঈদের পোশাক কেনাকাটার মজার স্মৃতি নিয়ে আব্দুস সালাম জানান, ঈদে নতুন জামা কেনা, নতুন জামা লুকিয়ে রাখা, ঈদের নতুন জামা পরে বন্ধুদের সাথে ঘুরতে বেড়ানো সবকিছু মিলিয়ে অনেক মজার স্মৃতি রয়েছে। যার অনেক এখন কিছুই মনে নেই। ঈদের প্রথম সালামির পাওয়ার অনুভূতি নিয়ে আব্দুস সালাম জানান, সেটা তো অনেক আগের কথা। খুব কঠিন মনে করা। তবে প্রথম সালামি পাওয়ার কথা মনে না থাকলেও সালামী আমার মনে আছে ঈদে পঞ্চাশ পয়সা করে দেয়া হত।
আর প্রথম সালামি পাওয়া হত বাড়ির বড়দের কাছ থেকে। তারপর নতুন পোশাক পড়ে বেড়িয়ে পড়তাম। এখন তো বড় হয়ে গেছি এখন আর সালামী পাওয়া হয় না। তবে সালামী দেয়া হয়। আমাদের সময় পঞ্চাশ পয়সায় সারতে পারলেও এখন তো ১০০ টাকায় সারা যায় না। আমার মেয়ে তো ঈদের দু’দিন আগে থেকেই গুনতে থাকে কত টাকা পাবে না পাবে। আমাদের সময়ও এমন ছিল। আমরা ও হিসেব করে রাখতাম কতটাকা পাব না পাব। সুন্দর মুহূর্ত ছিল। এখনও খুঁজে পাই তবে পাওয়ার মাঝে নয় আনন্দটা খুজে পাই দেয়ার মাঝে। ঈদের সময় বাসায় পছন্দের খাবার নিয়ে আব্দুস সালাম জানান, ঈদের সময় সেমাইটা খেতেই আমার বেশি পছন্দ। অন্যান্য খাবার তো আছেই।
তবে সেমাইটা খুব ভালো লাগে। আগে ঈদ উদযাপন আর এখনকার ঈদ উদযাপনের পার্থক্য নিয়ে আব্দুস সালাম জানান, পার্থক্য তো আছেই। অনুভূতিটা থাকলেও আগেও মত নেই। যেমন আগে অনুভূতি ছিল ছিল নতুন জামা পরে বন্ধুদের সাথে বের হওয়ার যে আনন্দ। সেই আনন্দ,অনুভূতিটা এখন আর আগের মত নেই। তাছাড়া এখন সময়ের ও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এবারে ঈদে পরিবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে আব্দুস সালাম জানান, ঘুরতে বেড়ানো সেটা প্রকৃতির উপর নির্ভর করবে। বাইরে যে প্রকৃতির অবস্থা ঈদের দিনও যদি আবহাওয়া এরকমই তাহলে তো বাসায় ঈদের দিন কাটানো হবে। ঈদে সহকর্মীদের সাথে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি নিয়ে আব্দুস সালাম জানান, ঈদে সহকর্মীদের সাথে ঈদ আনন্দটা ভাগাভাগি করে নেয়ার একটা পন্থা হচ্ছে কাজ।
যেহেতু আমরা সাংবাদিক সেদিক থেকে ঈদের দিন সকাল বেলা আমাদের কাজের চাপটা বেশি থাকে। ঈদের নামাজ পড়ে এসেই ঈদ জামায়াতের ফুটেজ বানানো। নিউজ দেয়া নানান কাজ থাকে। এর মধ্যেই হয় ওদের সাথে দেখা হয়ে যায়। মুলত কাজ দিয়ে যেহেতু দিনটা শুরু সেই দিক থেকে কাজ দিয়ে আমরা সহকর্মীদের সাথে আমরা ঈদ আনন্দটা ভাগাভাগি করা হয়। এ সময় বিশ্বকাপ ফুটবলে দলের সমর্থন নিয়ে জানতে চাইলে আব্দুস সালাম বলেন, আমি তো জার্মান সমর্থন করি। মজার ব্যাপার হচ্ছে আমার মেয়ে ব্রাজিল, আমার স্ত্রী আর্জেন্টিনা সমর্থক। তবে আমার আশ্বাস এবার জার্মানীই বিশ্বকাপ অর্জন করবে। এ সময় যুগের চিন্তা ২৪’র ঈদ আড্ডা থেকে আব্দুস সালাম পরিবার পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও সহকর্মীদেরকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান।