রোববার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪   ভাদ্র ২৪ ১৪৩১

ব্লাড ডোনারের বেডের অভাবে রোগীদের ভোগান্তি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪  

 

নারায়ণগঞ্জ জেনারেল ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে রক্ত ডোনারের রুম নেই। প্যাথলজির রুমে মাত্র ১টি বেডের মাধ্যমে তারা প্রতিদিন প্রায় ৮-৯ জন রোগী জন্য রক্ত নিয়ে থাকে। রুম এবং বেড সংঙ্কট থাকার কারনে জরুরি রোগী জন্যও একের পর এক সিরিয়ার দিয়ে দিতে হচ্ছে রক্ত। অন্যদিকে রুমের পাশাপাশি হাসপাতালে নেই ব্লাড ট্রান্সলেশনের কোনো ডাক্তার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে জায়গা সংঙ্কট থাকার কারণে তারা রুমের ব্যবস্থা করে দিতে পারছে না।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, প্যাথলজির রুমে মাত্র ১ টি বেডে নেওয়া হচ্ছে রক্ত। বাকি প্রায় ৩-৪ জনের মতো রক্তের ডোনার এনে রোগীর অভিভাবকরা দাঁড়িয়ে আছে। একজন হলে অপর জন দিবে। এভাবেই সিরিয়াল মেনে রক্ত নেওয়া হচ্ছে।

 

রক্ত দেওয়ার জন্য ডোনার নিয়ে এসে রুমে বাহিরে দাঁড়িয়ে এক রোগীর অভিভাবক বার বার বলছে স্যার আমার রোগীটা জরুরি ডোনার নিয়ে এসেছি। আমি কি তাকে ভিতরে নিয়ে আসবো।

 

অতঃপর সেই অভিভাবকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এর আগে তিন ব্যাগ রক্ত লেগেছিলো আমার রোগী। তখনও এসে ডোনার নিয়ে এই রকম দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিছুক্ষণ আগে ডাক্তার বলছে জরুরিভাবে নাকি আরেক ব্যাগ রক্ত প্রয়োজন। তাই তাড়াতাড়ি করে ডোনারের ব্যবস্থা করে নিয়ে এসেছি। এসে দেখি আমার আগে এখানে আরো ২জন বসে আছে। এখন পরে এসে আমাকে তো তারা আগে দিবে না। প্রতিদিন যে কয়জনই ডোনার আসুক না কেন একটা বেডে মধ্যেই রক্ত নেওয়া হয়। একজন রক্ত না দেওয়া পর্যন্ত আরেক জনের যতই জরুরি থাকুক না কেন দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

 

অপর এক রোগীর অভিভাবক বলেন, এতো বড় সরকারি হাসপাতালে মাত্র একটি ডোনারের বেড এটা কেমন। যেখানে প্রায় ৯-১০ তো হবেই প্রতিদিন রক্ত দেওয়ার জন্য ডোনার আসে। কারো আছে যে ইমার্জেন্সি দরকার কিন্তু এসে দেখলো তার আগে সিরিয়ালে লোক আছে সময় লাগবে এটা তো হয় না, তাই না।  

 

এ বিষয়ে মেডিকেল অফিসার (প্যাথলজি) এর ডাক্তার ঝুমা সাহা যুগের চিন্তাকে বলেন, ডোনারের রুম দেওয়ার জন্য আমরা মৌখিক এবং লিখিত ভাবে সিভিল সার্জন স্যারকে আমার অনেক বার বলেছি। তবে তিনি আমাদের বলেছিলো যে আইসিউ চালু হওয়ার পরে তিনি আমাদের চার তলাতে একটা রুম দিবে। প্যাথলজি এবং ব্লাড ট্রান্সলেশনের আমাদের একই ডিপাটমেন্ট থেকে চলে। ব্লাড ট্রান্সলেশনের কোনো আলাদা ইউনিট আমাদের ডিপাটমেন্টে নেই। এবং ব্লাড ট্রান্সলেশনের লোকও আমাদের নেই।

 

প্যাথলজির লোক দিয়ে আমরা ব্লাড ট্রান্সলেশনের কাজটা করাই। এই রুমে যারা আছে তারা সবাই প্যাথলজির কেউ ব্লাড ট্রান্সলেশনের জন্য পোষ্টেট না। যদি আশেপাশে আমাদের রুম দেওয়া হয় তাহলে ভালো কিন্তু যেখানে একই লোক দিয়ে আমরা দুইটা ডিপাটমেন্টের কাজ করাই তাদের তো সম্ভব না ৪ তলায় গিয়ে ব্লাড নিয়ে আবার নিচ তলায় আসবে প্যাথলজির কাজ করার জন্য।

 

তিনি আরো বলেন, আমাদের নিয়ম আছে যে একজন ডোনার রক্ত দেওয়ার পর মিনিমান ১৫-২০ মিনিট রেস্ট নিবে। কিন্তু আমাদের ১টা বেড থাকার কারণে সেই ডোনার রক্ত দেওয়ার ৫মিনিট পরেই উঠে যেতে হচ্ছে।

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন এএফএম মশিউর রহমান যুগের চিন্তাকে বলেন, ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে বর্তমানে জায়গা সংকটে রয়েছে। এ কারণে রুমটা দিতে পারছি না। ৪ তলাতে জায়গা থাকার কারণে আমি চেয়েছিলাম ডোনারের রুমটা এখানেই দিবো। কিন্তু ডাক্তারের কাছাকাছি না হওয়ায় রোগীরা মাইন্ড করে। তবে বিষয়টি আমার মাথায় আছে আমি তাড়াতাড়ি চেষ্টা করবো রুমের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।  

 

একই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে আরএমও ডা. শেখ ফরহাদ কে মুঠোফোনে বহুবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন কলটি রিসিভ করেননি। এস.এ/জেসি

এই বিভাগের আরো খবর