মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

ভোগান্তির আরেক নাম দুরন্ত পরিবহন

প্রকাশিত: ১০ মে ২০১৮   আপডেট: ১০ মে ২০১৮

স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : চিটাগাং রোড টু চাষাড়া যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে দুরন্তকেই বেছে নেয় সাধারন যাত্রীরা। বর্তমানে এ পরিবহনের স্বেচ্ছাচারিতায় অতিষ্ট হয়ে পড়েছে যাত্রীরা। তাদের মতে ভোগান্তির আরেক নাম হচ্ছে দুরন্ত পরিবহন। এ পরিবহনে ভাড়ার তারতম্য নিয়ে প্রায় সময় যাত্রীদের সাথে ভাড়া নিয়ে হেলপার চালকের বাকবিতন্ডা ঘটছে।

 

অনেক সময় যাত্রীদেরকে শারীরীকভাবে লাহ্নিত করতেও এ পরিবহনের লোকজন দ্বিধাবোধ করেন না। ফলে সরাসরি না পেরে প্রতিবাদে ভিন পথ বেছে নিচ্ছেন অনেকে। অনেকেই আবার সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রতিবাদ করছেন। যেমন প্রতি বাসস্ট্যান্ডে আসতে এক ভাড়া আর যেতে ভিন্ন ভাড়া গুনতে হয় কেনো?? আসার সময় রাস্তা ছোট থাকে কিন্তু যাওয়ার সময় রাস্তা বড় হয়ে যায় নাকি?? হেলপারকে জিজ্ঞাসা করলে বলে আমরা কি করবো, ২নাম্বার ইস্টানে কাউন্টারে যাইয়া জিজ্ঞাসা করেন। গতকাল রাত ৮টার দিকে চাষাড়া থেকে আসার সময়, এক ব্যাক্তি আই.টি স্কুল থেকে উঠে আমার পাশে বসে, তার নাম মোঃ কায়সার সেয় আদমজী ইপিজেট যাবে, কিছুক্ষন পরে হেলপার আসে ভাই ভাড়া দেন, লোকটা ১০ টাকা দিলো, হেলপার বলে কি দিলেন, ১৫ টাকা দেন, যাত্রীটি বলে কেনো দিবো প্রতিদিন আসা যাওয়া করি ১০টাকা দিয়ে আজকে ১৫ টাকা দিবো কেনো?? হেলপার বলে আমাদের এইটায় ১৫ টাকা দিতে হবে, অন্য কারে কি দিলেন আমাদের দেখার দরকার নাই, আসলে কেউ কি বলতে পারবেন?? সঠিক ভাড়া কতো??’ এভাবেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের ভোগান্তির কথা উল্লেখ করে এক ব্যক্তি (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক)। তবে দুরন্ত পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের এ ভোগান্তি নতুন কিছু নয়।

 

এই পরিবহনটি কোন উপলক্ষ্য ছাড়াই যাত্রী প্রতি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। আদায় করছে ১৫-২০ টাকা। কেন দুই টাকা করে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে এমন প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর তো মিলছেই না বরং যাত্রীদের সাথে খারাপ আচরণে লিপ্ত হচ্ছে গাড়ি চালক ও কন্ডাক্টার। দুরন্ত পরিবহনের এমন আচরণে ক্ষুদ্ধ যাত্রীরা। তথ্য সূত্রে জানা যায়, ক্ষমতাসীন দল ও পুলিশ প্রশাসনের ছত্রছায়ায় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ এই পরিবহনটি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ট্রাফিক পুলিশ থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে নিয়মিত টাকা দিয়ে মেয়াদ উত্তীর্ণ এবং অনুমোদনহীন দুরন্ত পরিবহনের গাড়িগুলো দীর্ঘদিন যাবত চলাচল করছে। এ পরিবহন নিজস্ব কোনো বৈধ স্ট্যান্ড না থাকলেও মূল রাস্তায় অনিয়মতান্ত্রিক স্ট্যান্ড গড়ে তুলে সারিবদ্ধভাবে গাড়ি রেখে যান ও জন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে চলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুরন্ত পরিবহনের এক চালক বলেন, আমাদের তো কিছু করার নাই। আমরা হইলাম কর্মচারী। আমাদের যেভাবে বলে সেভাবেই আমরা করি। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব দৃশ্য অনেক পুরনো হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। মূলত এই পরিবহন থেকে তারা মোটা অঙ্কের অর্থ পেয়ে থাকে বলেই কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেই স্থানীয়রা অভিযোগ তুলছেন। অথচ এদের অলিখিত স্ট্যান্ডের কারণে প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। অপরদিকে, গাড়িগুলো লক্করঝক্কর হয়ে পড়েছে। এর সিট গুলো অতন্ত নোংরা। এর বিকট শব্দে আতংক সৃষ্টি হয় ভালোমতে গন্তব্যে পৌঁছাতে যাবে কিনা সংশয় দেখা দেয়। অধিকাংশ চালক ও হেলপার অল্প বয়সের। বাসগুলোর ফিটনেস আছে কিনা তাতেও সন্দেহ রয়েছে। নগর বিশেষজ্ঞদের মতে, অপরাধী আর প্রশাসন যদি একে অপরের সম্পূরক হয়ে ওঠে তাহলে সেখানে আইনের শাসন থাকে না। সাধারণ মানুষ তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। যার প্রকৃত উদাহরণ দুরন্ত পরিবহন। তবে আশা করি যে, প্রশাসন এসব ব্যাপারে দ্রুত হস্তক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

এই বিভাগের আরো খবর