মাজার ইস্যুতে বিএনপি’র আন্দোলনের হুমকি, শক্তি নেই দাবি আ’লীগের
যুগের চিন্তা অনলাইন
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:৪৫ পিএম
সম্প্রতি রাজনৈতিক অঙ্গনের আলোচিত ইস্যু ছিলো চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানে কবর বিতর্ক। সেই বিতর্কের ঢেউ আছড়ে পরে নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনেও। জেলার বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলছে জিয়াউর রহমানের মাজার ইস্যুটি সরকারের জন্য কাল হতে পারে, হতে পারে সরকার পতনও।
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বলছে বিএনপি অনেক সময় অনেক কথাই বলে থকে, কিছু করার মতো শক্তি নেই বর্তমান বিএনপির। ক্ষমতাসীন দলের বিতর্কিত মন্তব্য জেরে আগামীতে রাজনৈতিক কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে এমনও মন্তব্য করেছে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির এক নেতা। অপর দিকে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ সমর্থীত মুক্তিযোদ্ধা বলছেন রাঙ্গুনিয়ায় জিয়ার লাশ পুরিয়ে ফেলা হয়েছিল শুনেছেন তারা।
এবিষয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ সভাপতি এ্যাড.সাখাওয়াত হোসেন খান বলছেন, বর্তমান সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করে জনগনের মধ্যে আলোচনা তৈরী করতে চাচ্ছে। বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যন্য মন্ত্রি এবং নেতারা যে ধরণের বক্তব্য দিচ্ছে আমি মনে করি এটা দূর্ভসন্ধিমূলক। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক, মহান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডর, একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি। তিনি মহান মুক্তযুদ্ধে সম্মুখসারীর একজন যোদ্ধা। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানকে নিয়ে যত ঘটাঘাটি করবে ততই তাদের ক্ষতি হবে। শহীদ জিয়াউর রহমানকে এখনো এই দেশের মানুষ ভালোবাসে। আর মানুষ ভালোবাসে বলেই বর্তমান সরকার তাকে টার্গেট করেছে।
মোবাইল ফোনে সাখাওয়াত হোসেন খান আরো বলেন, এই বিষয়ে আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচী ঘোষণা করবো। বাস্তবতা হলো কেউ যদি পাথর দিয়ে কাউকে ঢিল মারে সেক্ষেত্রে তারও পাটকেল আঘাত পায়। এই মাজার ইস্যুটি সরকারের জন্য কাল হতে পারে, হতে পারে সরকার পতন। নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই যুগের চিন্তাকে জানান, বিএনপি অনেক সময় অনেক কথাই বলে থাকে। তারা বলে আর মাত্র কয়েকদিন সরকার আছে। আর মাত্র ৩ মাস, পাঁচ মাস আসে সরকার এমন মন্তব্য করে বিএনপি। তারা বলছে গণঅভ্যুত্থান হবে আরো কতকিছু বলছে। কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছুই ঘটছে। গণঅভ্যুত্থান করারমতো বিএনপির সেই শক্তি আছে?
নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্র দলের সভাপতি মো. সাহেদ যুগের চিন্তাকে জানান, সাবেক রাষ্ট্রপতি শহিদ জিয়াউর রহমানের মাজারে হাত দেওয়ার ভুল করবেনা শেখ হাসিনা। ১/১১ এর পর অবৈধভাবে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া ও আফগানস্থানে এমন গুম-খুন হয়না যেটা বর্তমান সরকারের আমলে বাংলাদেশে ঘটছে। মাজার নিয়ে আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি করছে। কিন্তু এতো নিঁচুমানের স্ট্যান্টবাজি খুবই লজ্জা হয় আমাদের।
তিনি আরো বলেন, যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল তখন দেশের মানুষ ও রাজনৈতিক দলগুলো পূর্ণ গণতন্ত্র ভোগ করেছে। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশবাসীর প্রতিবাদের ভাষা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য অমানিক আইন প্রস্তুত করে। যেটা দিয়ে বিএনপিকেও দমন করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা সফল হেবনা। জানা গেছে, চন্দ্রিমা উদ্যানে তো জিয়ার কবরই নেই এমন একটি মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতারা সেখানে যেয়ে তামাশা করেন কেন? প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতাই এই ইস্যুতে সরব হন এবং বিভিন্ন মন্তব্য করেন।
এই বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে প্রখ্যাত মার্কিন স্থপতি লুই আই কানের পরিপূর্ণ নকশার বাস্তবায়ন করা হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ নেই বলে মন্তব্য করেন।