বৃহস্পতিবার   ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ১২ ১৪৩১

মানবতার ফেরিওয়ালা ফরিদ আহম্মেদ বাধন

প্রকাশিত: ১২ মে ২০২০  

মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন সাংবাদিক ফরিদ আহম্মেদ বাধন, ঘরে ঘরে পৌঁছে দিচ্ছেন খাদ্যসামগ্রী। বুদ্ধিদীপ্ত উদ্যোগ আর মহানুভবতা দিয়ে ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছেন দৈনিক যুগের চিন্তা পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার, দৈনিক অধিকার পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ও ফতুল্লা মডেল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহম্মেদ বাধন। 

 

করোনার এই মহাদুর্যোগে দিন-রাত মানুষের পাশে থেকে পুরো মুসলিমনগরে তিনি সাড়া জাগিয়ে তুলছেন। মুসলিমনগর এলাকার খেটে-খাওয়া মানুষগুলো করোনার এই মহাদুর্যোগে কর্মহীন হয়ে পড়ায় তাদের জন্য খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ছুঁটে চলেছেন বাড়ি বাড়ি। তাঁর এই ব্যতিক্রম উদ্যোগ অব্যাহত থাকায় সর্বমহলে তিনি ব্যাপক প্রশংসিতও হচ্ছেন। 

 

দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকেই সাংবাদিক ফরিদ আহম্মেদ বাধন জনসচেতনতায় বেশ তৎপর রয়েছেন। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে দোকানের সামনে সুরক্ষারেখা অংকন, জনসচেতনতায় মাইকিং, এ্যাম্বুলেন্স সেবা সহ বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সুবিধাবঞ্চিতদের মধ্যে নিজ হাতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়াসহ বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে চলেছেন অব্যাহত গতিতে। 

চলমান পরিস্থিতিতে সমাজের মধ্যবিত্তসহ অনেকে কর্মহীন হয়ে পড়লেও ব্যক্তিত্বের কারণে কারো কাছে সাহায্যের জন্য যেতে না পারায় সহায়তা প্রত্যাশীদের সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা করে রাতের অন্ধকারে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। কর্মহীন ও অসহায় মানুষের দৌড়গোড়ায় পৌঁছাতে এলাকার যুবসমাজদের নিয়ে তৈরি করেছেন ‘ভালোবাসার ফেরিওয়ালা’ নামে একটি সংগঠন।

 

সাংবাদিক ফরিদ আহম্মেদ বাধন ছুঁটে চলেছেন, সুকান্তের রানারের মত দূর্বারগতিতে। তার এ পথ চলা মানবতার কল্যাণের জন্য। সাংবাদিক ফরিদ আহম্মেদ বাধন তার সহযোদ্ধা ও সহকর্মীদের সব সময়ই বলেন, তোমরা মনে রেখো ‘যে জীবন মানুষের কল্যাণে আসে না, সে জীবনের কোনো মূল্য নেই’।

 

এ বানীকে বুকে ধারণ করে মানবতার কল্যাণে শান্তির দূত হয়ে সাংবাদিক ফরিদ আহম্মেদ বাধন এগিয়ে যাচ্ছেন, তিনি তার সততা, আদর্শ থেকে কখনও সরে দাঁড়াননি। মিথ্যের সঙ্গে আপোষ করেননি। তাইতো তিনি মুসলিমনগর তথা ফতুল্লার প্রতিটি মানুষের নিকট নিজেকে শান্তির দূত হিসেবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।

 

এ প্রসঙ্গে মুঠোফোনে জানতে চাইলে সাংবাদিক ফরিদ আহম্মেদ বাধন বলেন, এক মহাক্রান্তিকাল পার করছি। আমাদের চিরচেনা পৃথিবীর সমস্ত দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। বিভিন্ন দেশে চলছে মৃত্যুর মিছিল। ইতোমধ্যে আমাদের দেশেও অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন। 

 

নারায়ণগঞ্জে লকডাউন ঘোষণা দেয়ার প্রথম থেকেই এলাকার যুবসমাজদের নিয়ে মাইকিং, দোকানের সামনে সুরক্ষারেখা অংকন সহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কাজ শুরু করি। লকডাউনে যানবাহন বন্ধ ঘোষণার পর এলাকার অনেকেই যানবাহনের অভাবে চিকিৎসা সেবা নিতে পারছিলো না। 

 

এলাকার অসুস্থ রোগীরা যানবাহনের অভাবে যেন চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেইলক্ষ্যে নিজস্ব উদ্যোগে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সার মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছি। এ কাজগুলো কোন প্রশংসা অর্জনের জন্য নয়।

 

তিনি বলেন, পরবর্তীতে ‘ভালোবাসার ফেরিওয়ালা’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেছি। এলাকার যুবসমাজদের ‘ভালোবাসার ফেরিওয়ালা’ সংগঠনের প্লাটফর্মে নিয়ে এসে একত্রে বিভিন্ন জনসচেতনতা মূলক কাজ করে যাচ্ছি। 

 

কোনো সেলফি কিংবা ফটোসেশন নয়, রাতের অন্ধকারে ৯০০ পরিবারের মাঝে পৌঁছে দেয়া হয়েছে খাদ্যসামগ্রী। যাদের ঘরে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে তারা কেউই আমাদের চেহারা পর্যন্ত দেখেননি। এছাড়াও ৩০টি শিশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। 

 

সত্যিকার অর্থে ‘ভালোবাসার ফেরিওয়ালা’ সংগঠনের প্রত্যেকটি সদস্য অত্যন্ত আন্তরিক ও মানবিক। ‘ভালোবাসার ফেরিওয়ালা’ সংগঠনের সদস্যরা ‘মানুষ মানুষের জন্য’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিনা স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছেন। তারা যেকোনো উদ্যোগে আমাকে উৎসাহ ও সাধুবাদ জানিয়েছেন।

 

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের কাছে ফোন আসে ‘ঘরে খাবার নেই’। তখনি আমাদের টিম সেখানে উপস্থিত হয়ে খাদ্যসামগ্রী দিয়ে আসেন। ‘ভালোবাসার ফেরিওয়ালা’ সংগঠনের সদস্যদের সচেতনতামূলক কাজের প্রশংসা করে এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুজ্জামান তাঁর ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে ২টন চাল প্রদান করেছেন। 

 

এছাড়াও মুসলিমনগর এলাকার অনেক বিত্তবানরা আমাদের মাধ্যমে কর্মহীন ও অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কর্মহীন ও নিম্নআয়ের মানুষদের সহায়তা করতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে, “সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।”
 

এই বিভাগের আরো খবর