বৃহস্পতিবার   ১২ ডিসেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ২৭ ১৪৩১

যুবদলের রনির কাণ্ডে বিস্মিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ৫ ডিসেম্বর ২০২৪  


# প্রশাসনের দ্রুত এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত : রফিউর রাব্বি
# আমরাও প্রশাসনের সাথে কথা বলছি : মহানগর আমীর আব্দুর জব্বার
# রনি যা করছে তা অনেক খারাপ কাজ : মাওলানা মাসুম বিল্লাহ
# পুনর্বাসনের চেষ্টা করে তাহলে তাদেরও শাস্তি দাবি করছি : মশিউর রিচার্ড
# আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার চিন্তা তাকে বাদ দিতে বলি : শুভদেব

আওয়ামী লীগের গডফাদার হিসেবে খ্যাত বিতর্কিত নেতা ও সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানের দুই ক্যাডার মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাইল রাফেল প্রধানের সাথে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির মালয়েশিয়ায় বৈঠকের বিষয়টি সারা দেশব্যাপী আলোড়ন তৈরি করেছে।

 

 

গত ৫ আগষ্ট হাজারো ছাত্র-জনতার লাশের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারি সরকারের পতনে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হলেও বিগত দিনের সেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের প্রেতাত্মারা কিছু নাম সর্বস্ব। গডফাদার শামীম ওসমান তার ছেলে অয়ন ওসমান এবং ভাতিজা আজমেরী ওসমানের ক্যাডার হিসেবে খ্যাত দুই ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ ও রাফেলের আত্মীয়তার সুবাদে ভাই যুবদল নেতা মশিউর রহমান রনি সেই ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রেতত্মাদের বিগত দিনে পাওয়া অর্থগুলো আবারো তাদের ভান্ডারে পৌঁছে দিচ্ছেন।

 

 

এ নিয়ে বিশ^য় যুগের চিন্তার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পর সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যাকে ঘিরে স্থানীয়সহ জেলার বিএনপি নেতাকর্মীরা ক্ষুদ্ধ। এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ছাত্র-জনতাসহ এই যুবদল নেতা মশিউর রহমান রনির উপরে ফুঁসে উঠেছে। এদিকে ছাত্র আন্দোলনের গত ১৮-১৯ জুলাই প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ছাত্র-জনতার উপরে গুলি চালনো সেই রিয়াদ-রাফেলকে প্রকাশ্যে রনি সহযোগীতা করার প্রতিবেদন বেড়িয়ে আসলে সুধিমহলে রনিকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য তৈরি হয়েছে। আর রনির এই কর্মকান্ডে নারায়ণগঞ্জের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সাথে বেঈমানী হচ্ছে বলছে অনেকেই।

 

 


জানা গেছে, মূলত বিকেএমইএ'র শীর্ষ পদে আসীন এক নেতার আশীর্বাদে রনি, তার দুই ছাত্রলীগ ভাই রিয়াদ ও রাফেলের স্থলাভিষিক্ত হন। রাফেল প্রধান বৃহত্তর মাসদাইর এলাকা থেকে বিসিক পর্যন্ত অয়ন ওসমানের নিয়ন্ত্রণাধীন জেডএন কর্পোরেশনের ইন্টারনেট লাইন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাফেল প্রধানের আপন ভাই রাসেল, আত্মীয়তার সম্পর্কে ভাই যুবদল নেতা মশিউর রহমান রনি শেল্টারে বর্তমানে হাতবদলের মাধ্যমে সেটি পরিচালনা করে আসছেন।

 

 

জেডএনের বেশ কিছু ইন্টারনেট লাইন হাতছাড়া হলেও রনির কল্যানে এগুলো অক্ষত আছে। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার লাইনে ১৫ লাখ টাকার বেশি এই খাতে আয় হচ্ছে বলে জানিয়েছে সূত্র। তাছাড়া রিয়াদ ও রাফেলের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঠিকাদারীর পদ্ধতি, অন্যান্য উৎস থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আয়ের পদ্ধতি এবং বিসিক এনায়েনগর ও মাসদাইর এলাকার প্রতিষ্ঠানের ঝুট নিয়ন্ত্রণ ও ভাগাভাগি প্রসঙ্গেই আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।

 

 

এনায়েতনগর ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার শাহজাহান মাতবর এবং ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার আতাউর মেম্বারের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্কের জের ধরে আওয়ামী লীগ আমলে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল রিয়াদ ও রাফেলের। পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগের দোসররা পালালেও রনির শেল্টারে এখনো দুই ওয়ার্ডে আগের মতো দাপুটে এই দুই মেম্বার।

 

 

সর্বশেষ চলতি বছর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৬নং ওয়ার্ডে শাহজাহান মাতবরকে জেতাতে জালভোট দিতে গিয়ে ও কেন্দ্র দখল করতে গিয়ে ধরা পড়েন ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুর রহমান রিয়াদ। তখন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। র‌্যাবের এক অফিসারের শক্ত অবস্থানের বিপরীতে শামীম ওসমান উপস্থিত হলে রিয়াদ বিচারের সুরে বলেন, 'কুত্তার মতো পিটাইছে”।

 

 

এসময় কারণ জিজ্ঞাসা করলে র‌্যাব-১১ এর স্কোয়াড্রন লিডার এ কে এম মনিরুল আলম দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, 'ওদেরকে মারি নাই স্যার। ওরা দেখেন এসব জিনিসপত্র নিয়ে (ধারালো অস্ত্র, লাঠিসোটা দেখানো হয়) আসছে। ওখানে ককটেল আছে। তারা এখানেই ছিল। আপনি সবাইকে জিজ্ঞাসা করেন।' মূলত ওই ঘটনা ছিল সেই এলাকার ফুট ও ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের জন্য ওই মেম্বারকে জেতানো অত্যাবশকীয় হয়ে পড়েছিল।

 


১ ডিসেম্বর যুগের চিন্তায় 'ছাত্রলীগ দুই ভাইয়ের ব্যবসা বুঝে নিতে মালয়েশিয়া যুবদল নেতা রনি' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে আবারো রোমাঞ্চর এক ঘটনা বেরিয়ে আসে। সমালোচনার মুখে পড়া জেলা যুবদলের সদস্য সচিব রনি পরবর্তীতে নভেম্বরে তার বিদেশে অবস্থানের কথা অস্বীকার করেন। তবে ২ ডিসেম্বর চারিদিকে মালয়েশিয়ায় রনির অবস্থানের বিভিন্ন ছবি ভাইরাল হতে শুরু করে, এবং যুগের চিন্তার অনুসন্ধান সত্য বলে প্রমাণিত হয়।

 

 

এদিকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে উঁচুতলা ভবনের পাহাড়ি সৌন্দর্যের ভিউ নিয়ে কয়েকটি ছবি তুলেছেন মশিউর রহমান রনি, আরেকটি ছবির পেছনে লেখা কবষঁধৎ, যা মূলত একটি মালয় ভাষা, এটির অর্থ ইমার্জেন্সি এক্সিট। এখানে রনি বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের সাথে ছবি তোলেন। আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে মশিউর রহমান রনি বিখ্যাত ঘড়ির ব্র্যান্ড ঐঁনষড়ঃ এর কুয়ালামপুরের শোরুমে গিয়েছেন, সেখান থেকে ঘড়ি কিনেছেন এমনকি সেই শো- রুমে ছবিও তুলেছেন।

 

 

এছাড়া সফরে মালয়েশিয়ার কুয়ালামপুর শহর থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রাজায়া শহরে পিংক মসজিদের (পুত্রাজায়া উইলিয়ার প্রধান মসজিদ) এর সামনেও ছবি তুলেছেন। এছাড়া ৩০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে মশিউর রহমান কুয়ালামপুরের সহোটেল প্যাভিলিয়নে গিয়েও তার শুভানুধ্যায়ীদের সাথে স্বাক্ষাৎ করেছেন।

 

 

এদিকে গোটা মাসদাইর এলাকা এবং রনির শুভানুধ্যায়ী সবাই গত ১০দিনেরও বেশি সময় ধরে মশিউর রহমান রনির বিদেশ সফরের কথা জানলেও রনি তা অস্বীকার করছেন। তিনি বলছেন, তিনি গত ১০দিন ধরে লালমনিরহাট ছিলেন। তবে কয়েকটি পত্রিকায় ইন্টারভিউতে রনি দাবি করেছেন তিনি কোথাও যাননি, তিনি নারায়ণগঞ্জেই ছিলেন।

 


তবে ১ ডিসেম্বর দুপুরের পর যুবদল নেতা রনির দারোয়ানকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, স্যার দেশের বাইরে থেকে একটু আগে ফিরেছেন, বাসায় ফিরে রেস্ট করছেন। এছাড়া মশিউর রহমান রনির কর্মী ও পরিচিতজনদের সাথে দেখা হলেই বলছেন, তার ভাই (মশিউর রহমান রনি) বিদেশ থেকে ফিরেছেন। অনেক চকলেট এনেছেন, পেয়েছেন কিনা?

 


মশিউর রহমান রনির অত্যন্ত ঘনিষ্ট বেশ কয়েকজন জানান, ১ ডিসেম্বর দুপুর ১টার আগে গত ১০দিনের বেশি সময় পর্যন্ত রনি কারো সাথে বাংলাদেশী মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা মেসেঞ্জারে সবার সাথে কথা বলেছেন। ১ ডিসেম্বর যুগের চিন্তায় সংবাদ প্রকাশের পর তড়িৎ গতিতে দেশে ফিরে আসেন মশিউর রহমান রনি।

 

 

যুগের চিন্তায় যেদিন সংবাদ প্রকাশ হয়েছে সেদিন সকালেই কুয়ালামপুর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা করেন রনি। তারা বলেন, মালয়েশিয়ার কুয়ালামপুর থেকে বাংলাদেশের ঢাকা আসতে ননস্টপ ফ্লাইটে সময় লাগে মাত্র ৩ ঘন্টা ৫৫ মিনিট থেকে ৪ ঘন্টার মতো। দেশে ফিরেই রনি এয়ারপোর্ট থেকে সোজা দৈনিক যুগের চিন্তা কার্যালয়ে আসেন দুপুর ৩টার পর।

 

 

এছাড়া তিনি ফোনে জানান, 'তিনি মাত্র লালমনিরহাট থেকে ফিরেছেন, গত ১০দিন তিনি লালমনিরহাট অবস্থান করছিলেন। এসময় তিনি বের হয়ে যাওয়ার সময় রাগে গজগজ করতে দেখে নেওয়ার হুমকি দিতে দিতে সিড়ি দিয়ে নেমে যান। তবে রাতে আবারো যুগের চিন্তা অফিসে এসে বিদেশে যাওয়ার কথা অস্বীকার করেন রনি।

 


এদিকে যুগের চিন্তায় সংবাদ প্রকাশের পর রনির মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত ছবি ভাইরাল হয়। রনি কখনো লালমনিরহাট ছিলেন, কখনোবা মাসদাইরের বাসায় ছিলেন এসব কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। মালেয়শিয়ায় অবস্থানরত ছবিগুলোর বিষয়ে মশিউর রহমান রনির কাছে জানতে চাইলে তিনি যুগের চিন্তাকে বলেন, এই সকল ছবি তো থাইল্যান্ডের ছবি! এগুলো পুরনো ছবি, হঠাৎ করে সামনে আসলো কি করে? তিনি জোর দিয়ে বলেন, তিনি দেশের বাইরে যাননি।'

 


এদিকে রাজনীতিক নেতৃবৃন্দ বলছেন, মাত্র দুইদিন আগের বিষয় যেহুতু ইমিগ্রেশন থেকে রনির দেশের বাইরে যাওয়ার তথ্য জানাটা দূরুহ কোন বিষয় নয়। বিদেশে ভ্রমণ কিংবা জরুরি প্রয়োজনে যে কেউ যেতেই পারেন, তাহলে রনি কেন বিষয়টি নিয়ে জল ঘোলা করছেন?

 

 

আত্মীয়তার সুবাদে ৫ আগস্ট পতনের পর পালিয়ে যাওয়া মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও তোলারাম কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ আর সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাইল রাফেল প্রধানের সাথে যোগাযোগও হতে পারে। তবে এটি নিয়ে কেন লুকোচুরি করছেন তিনি? জানতে চাইলে যুবদল নেতা রনি যুগের চিন্তাকে বলেন, “তারা আমার ভাই না, তারা শামীম ওসমানের কর্মী। এরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল।'

 


এছাড়া তিনি বলেন, ‘আমি দেশের বাইরে নভেম্বর মাসে যাইনি। তবে ডিসেম্বরে যাবে ভ্রমণে। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং চায়না ভ্রমণের জন্য আমার পাসপোর্ট জমা দিয়েছি। আশা করছি ডিসেম্বরের শেষে এই তিনটি দেশ ঘুরতে যেতে পারবো।'

 


এদিকে গত ৫ মাসের মধ্যে অনেকটাই ফুলে ফেঁপে উঠেছে এই যুবদল নেতা রনি। বর্তমানে আওয়ামীলীগের দোসর বিকেএমইএ'র শীর্ষ পদে আসীন এক নেতার বদৌলতে যুবদল নেতা রনি  তার ক্লিন ইমেজ রেখে তার লোক, ভাই, ভাগিনাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করিয়ে থাকেন বিসিকের বেশির ভাগ গার্মেন্টস। এর মধ্যে তামাই গার্মেন্টস, এবি এফ, নিহাম, ফকির এপারেলস, এলোবেডিট, ওয়েভটেক্স, খাতুন, এবি।

 

 

এ ছাড়া ও আরো বড় বড় একাধিক গার্মেন্টসের নিয়ন্ত্রণ এখন মশিউর রহমান রনির বদৌলতে তার লোকদের দখলে এ ছাড়া মাসদাইরের ফারিয়া গার্মেন্টস, সেঞ্চুরী গার্মেন্টস, আমানা গার্মেন্টস, শোভন গার্মেন্টসসহ এমন আরো বেশ কয়েকটি গার্মেন্টস ও তার ভাগিনা সাবেক ছাত্রলগি নেতা সিফাত এবং এনায়েতনগর ইউনিয়ন ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি জুম্মান ও তার বাবা জিলানীর দখলে বিসিক মাসদাইর জুড়ে বহু নিটিং জিম্মি করে রেখেছে বলে জানা গেছে।

 

 

এদিকে তার লোক হিসেবে বিসিক ও মাসদাইর জুড়ে কাজ করছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক পাইলিং জাহাঙ্গীর, এনায়েতনগর ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, রাজনীতি না করে ও মাসদাইরের সকল অপকর্মের প্রকাশে ও গোপনের শেল্টারদাতা রনির বড় ভাই শেখ রুবেল, সেলিম, শহীদ, মিজানসহ আরো বেশ কয়েকজনের মাধ্যমেই সব নিয়ন্ত্রণ করেন এই যুবদল নেতা রনি।

 

 

এ দিকে বিগত দিনে তার আওয়ামী লীগের আত্মীয় স্বজন যা করেছেন এখন তাদের থেকে ব্যবসাসহ সকল কৌশল বুঝে নিয়ে যুবদল নেতা রনি সব নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টায় রয়েছেন। তা ছাড়া যথাযথ ভাগ ও তার ছাত্রলীগের ভাইদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা ও করে রেখেছেন এই যুবদল নেতা রনি।

 

 

এদিকে এর আগের সেপ্টেম্বরের ২৯, ৩০ এবং অক্টোবরের ১ তারিখে ছাত্রলীগ নেতা রাফেল ও রিয়াদকে মালয়েশিয়ার কুয়ালামপুরে হাংতুয়া এলাকায় দেখা যায় যা রীতিমতে অনেকটাই ভাইরাল হয়। আর বর্তমানে রনি তার ছাত্রলীগ ভাইদের সাথে ব্যবসায়ী মিটিংয়ের উদ্দেশ্য মালয়েশিয়া যাওয়ার ছবি ভাইরাল।

 


এ বিষয়ে ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি যুগের চিন্তাকে বলেন, স্বৈরাচারি শেখ হাসিনার সাথে দলের যারা ভাগ বাটোয়ারায় জড়িত ছিলো তারা প্রকাশ্যে থাকুক বা কোনভাবে তৎপরতা চালাক এটা কোন সময় আমরা চাই না। আর বর্তমানে আপনাদের পত্রিকায় যে নিউজটি লাগাতার হচ্ছে, আমরা দেখতে পাচ্ছি যদি সেটা তদন্ত সাপেক্ষে সত্য হয়ে থাকে আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আর প্রশাসনের দ্রুত এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

 


জামায়েতে ইসলামীর মহানগর আমীর আবদুল জাব্বার যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘যে পার্টি যাই করুক সেটার খবর কিন্তু প্রশাসনের কাছে রয়েছে। আমরাও প্রশাসনের সাথে কথা বলছি, বর্তমানে প্রশাসনের সক্ষমতাসহ সার্বিক বিষয়গুলো মিলিয়ে তারা কিছু জায়গায় জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে, আবার কিছু জায়গায় পদক্ষেপ নেওয়ার চিন্তা করছে বলে আমাদের আশ^স্ত করেছে।’

 


তিনি বলেন, ‘গত ৫ আগষ্টের পর বিএনপির ছত্রছায়ায় আওয়ামী লীগের কেউ বেনিফিডেট হোক তা পুরোই দুঃখজনক বিষয়। আর বর্তমানে প্রশাসনের লোকজন কিছু করছে না এর ঊর্ধ্বে গিয়ে তো আমাদের করার কিছু নেই। কিন্তু আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি যে দখলবাজি, চাঁদাবাজির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকে।’

 


ইসলামী আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ যুগের চিন্তাকে বলেন, বর্তমানে যুবদলের রনিকে নিয়ে আপনাদের যুগের চিন্তায় নিউজ প্রকাশিত হচ্ছে আমরা তা দেখতে পাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, রনি যা করছে তা অনেক খারাপ কাজ। আমরা এমন কাজ প্রশ্রয় দেইও না, আগামীতে কখনো দিবো না। আর আপনারা ও যেটা সত্য সেটা তথ্যস্বরূপভাবে উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশিত করে যাবেন। কোন ভয় পাবেন না। আমরা সর্বদা সত্যের পাশে আছি।

 

 


বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘রিয়াদ ও রাফেলসহ ছাত্রলীগের যারা প্রথম সারির নেতৃত্বে যারা রয়েছে তারা নারায়ণগঞ্জের ছাত্র-আন্দোলনে যারা ছিলো তারা উপর ব্যাপক নির্যাতন নিপীড়ন করেছেন। এ দিকে বিগত দিনে শামীম ওসমান, অয়ন ওসমান, আজমেরী ওসমানের নাম বলে টেন্ডারবাজি থেকে শুরু করে এমন কাজ নাই যে তারা করে নাই। আমি তাদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানাই। আর কোন দলের কেউ যদি তাদের যদি কেউ বেনিফিডেট করতে চাই বা পুনর্বাসনের চেষ্টা করে তাহলে তাদেরও শাস্তি দাবি করছি।’

 


বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক শুভ দেব যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘আমাদের অবস্থা সব সময় জনগণের পক্ষে ছাত্রদের পক্ষে। এর বাহিরে গিয়ে যারা চাঁদাবাজির অংশ হয় দূর্নীতির অংশ হয় তাদের বিরুদ্ধে সব সময় আমরা সোচ্চার। এদিকে গত ট্রাম্পে আওয়ামী লীগ করেছে আমরা তার বিরোধীতা করেছি আর বর্তমানে যাতে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হয় তার আশা করি।’

 


তিনি বলেন, ‘আর বর্তমানে দেখতে পাচ্ছি বিগত দিনে যা আওয়ামী লীগের দখলে ছিলো তাদের সবই এখন দখল করছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা মনে করছে হাসিনা পালানোর পরপরই তারা যেমন ক্ষমতায় চলে আসছে, এটা আমরা কোনভাবেই কাম্য নয়। আর ছাত্র-জনতার রক্তের সাথে বেঈমানি করা। আর আমি তাদের হুঁশিয়ারী দিয়ে বলতে চাই আপনারা যদি আওয়ামী লীগের দেখানো পথে চলেন তাহলে আপনাদের ঠিক আওয়ামী লীগের মতোই অবস্থা হবে।

 

 

যারকে ঘিরে আমরা আগে থেকেই তাদের সাবধান হওয়ার জন্য আহ্বান জানাই। আর আমি মশিউর রহমান রনিকে উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, তিনি যাতে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার চিন্তা না করেন। তাহলে কিন্তু আওয়ামী লীগের যেভাবে বিচারের আওতায় আসতে হবে ঠিক তেমনি বিএনপিকে ও বিচারের আওতায় আসতে হতে পারে।’

 


এ বিষয়ে কোন প্রকারের মন্তব্য করতে রাজি হয়নি গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সূজন ও খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন মন্তব্য করতে রাজি হননি।       এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর