নায়াণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগে রথী মহারথী দাবি করা নেতারা আওয়ামীলীগের ট্যাগ ব্যবহার করে বছরজুড়ে মুখে বিশাল বিশাল বুলি ছাড়ালও আওয়ামীলীগের প্রতিকূল মুহুর্ত্বে আওয়ামীলীগের ট্যাগ আড়াল করে ছিলেন গৃহবন্ধি। এমনকি তাদের নেতৃত্বের সক্ষমতার জানান দেয়ার অবস্থা সৃষ্ট হলেও ছিলেন লেজ গুটিয়ে। কেননা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে সহিংসতার সময় নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের পার্টি অফিসের উপর দিয়ে স্মরণকালের সেরা তাণ্ডব এবং পার্টি অফিস যুদ্ধবিধস্ত ভবনে পরিণত হলেও এসকল রথী মহারথীদের মুখ দিয়ে সারা বছরের ন্যায় বড় বড় বুলি শোনা যায়নি। এমনকি পার্টি অফিস রক্ষায় কোন প্রকার প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ গড়ে তুলেননি। তবে আন্দোলন থেমে গেলে মহানগর আওয়ামীলীগের রথী মহারথী দাবি করা নেতারা গৃহবন্ধি থেকে বের হয়ে দলীয় আলোচনা সভায় উকি ঝুঁকি দিতে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে।
সূত্র বলছে, নায়াণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগে রথী মহারথী দাবি করা নেতাদের যুগ্ম সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদের প্রভাবে চাওয়া পাওয়ার যেন কোন কমতিই ছিল না। কেননা বছরজুড়েই তারা কখনো নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানপদ কখনো চাচ্ছেন সদর উপজেলার চেয়ারম্যানপদ অথবা নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগে আগামী দিনে শীর্ষ পদ দখল করতে একে অপরকে টার্গেট করে বাকযুদ্ধেই লিপ্ত থেকেছেন। অথচ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা এবং মহানগর আওয়ামীলীগের পার্টি অফিসেও ব্যাপক তাণ্ডবলীলা চালানো হলে এমনকি যার আদর্শে তারা আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেন বলে দাবি করেন জাতির পিতার ম্যুড়াল ভাঙচুর করা হলেও তাদের বুক ফাঁটেনি। কিন্তু বছরজুড়ে নিজেদের রথী মহারথী হিসেবে জাহির করতে অধিকাংশ সময়ই দাবি করে থাকতেন ছাত্র রাজনীতি এবং বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের ঘাত প্রতিঘাত অতিক্রম করেই তারা মহানগর আওয়ামীলীগের শীর্ষ পদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এমনকি দলীয় বিভিন্ন সভা সমাবেশে ভাড়াটিয়া লোক সমাঘম ঘটিয়ে বজ্র কণ্ঠে স্লোগান বক্তব্য দিয়ে নিজেদেরকে রথী মহারথী হিসেবে জাহির করেছেন। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অর্থাৎ কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে তাণ্ডব, আগুন,গুলাগুলি, হামলা পাল্টা হামলার প্রতিরোধ বা পার্টি অফিসের হামলার পর এ সকল নেতাদের পা রাজপথ স্পর্শ করতে দেখা মেলেনি।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের এসকল রথী মহারথীরা হলেন যুগ্ম সম্পাদক আহসান হাবিব, জিএম আরমান, শাহ নিজাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, মাহমুদা আক্তার মালা ও জিএম আরাফাত। তবে এদের মধ্যে অনেকেই হচ্ছেন কর্মীশূণ্য নেতা ও আবার অনেকের বিশাল কর্মী বাহিনী থাকলেও দলের সংকটময় সময়ে রাজপথে দেখা মিলে না। নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম মহানগর আওয়ামীলীগে রথী মহারথীদের অন্যতম। বছরজুড়ে সভা সমাবেশে ভাড়াটিয়া লোক সমাঘম ঘটিয়ে বজ্র কণ্ঠে স্লোগান বক্তব্য দিয়ে নিজেদেরকে রথী মহারথী হিসেবে জাহির করলেও প্রতিকূল মহুর্তে ছিলেন গাঁ ডাকা দিয়ে যার কারণে তার প্রতিষ্ঠিত নম পার্ক ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির সহিংসতার সময় তাণ্ডব চালালেও সেটি তিনি রক্ষা করতে ব্যর্থ হন। তখনই জনমনে প্রশ্ন উঠে যার এত বিশাল কর্মী বাহিনী নিজের পার্কই রক্ষা করতে পারল না আওয়ামীলীগের পার্টি অফিস রক্ষা করতে যাবে কিভাবে? তারপরও আওয়ামীলীগের ট্যাগে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান হওয়ার মনভাসনা রয়েছে। এছাড়াও আগামী দিনের মহানগর আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে আসার মনোভাব দেখাচ্ছেন। অপরদিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের ঘাত প্রতিঘাত অতিক্রম করেই তিনি মহানগর আওয়ামীলীগের শীর্ষ পদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এমনটা দাবি করলেও প্রতিকূল মহুর্তে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির সহিংসতার সময় তাণ্ডবের সময় তাকে দেখা যায়নি রাজপথে।
তবে বছরজুড়েই সাংগঠনিক সম্পাদক পদের প্রভাবে কখনো জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানপদ কখনো চাচ্ছেন সদর উপজেলার চেয়ারম্যানপদ চেয়ে থেমে যান। কিন্তু সাংগঠনিক সম্পাদক পদে থেকেও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির সহিংসতার সময় তাণ্ডবের পর নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক অবস্থা দুর্বল হলেও সেটা নিয়ে মুখ খুলতে দেখা যায়নি। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আহসান হাবীব এবং জিএম আরমান। একজন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার তাবেদারিতে মহাব্যস্ত থাকেন। আহসান হাবীব থাকেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের তাবেদারিতে জি এম আরফান থাকেন সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার তাবেদারিতে। কারণ উভয়ই কর্মীশূণ্য নেতা বিভেচিত মহানগর আওয়ামীলীগে। তাদের গুরুত্বপূর্ণ পদ থাকলেও তাবেদারি ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় না। যেমন: ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির সহিংসতার সময় তাণ্ডবে তাদের নেতৃত্বে কোন প্রকার ভূমিকা রাখতেই দেখা মেলেনি। অথচ তারাই মহানগর আওয়ামীলীগের আগামী দিনের নেতৃত্ব প্রত্যাশা করেন।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা আক্তার মালা ও জিএম আরাফাত তারা এখন দহরম মহরম সম্পর্কে রয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে জিএম আরাফাত বিরোধীতা করলে সেই বিরোধীতার পাল্টা সমালোচনা করে তীর্যক মন্তব্য করেন মাহমুদা আক্তার মালা। তাদের মধ্যকার পাল্টাপাল্টি মন্তব্যে মহানগর আওয়ামীলীগে বিশৃঙ্খলা সৃষ্ট হয়। তবে তারা কমিটি নিয়ে বেশ সোচ্চার থাকলেও দলীয় বিষয়ে অর্থাৎ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির সহিংসতার সময় তাণ্ডবে আওয়ামীলীগের পার্টি অফিস ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুড়াল ভাঙ্গলেও তাদের টনক নড়েনি। অথচ, উভয়ই বিভিন্ন সময় বলেছেন বিরোধী দল থাকা অবস্থায় আওয়ামীলীগের যেকোন আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির সহিংসতার সময় তাণ্ডবের সময় তাদের ভূমিকা রাখার যে সক্ষমতা ছিল সেটা স্পষ্ট হয়ে যায়। তারপরও তারা সম্প্রতিকালে মহানগর আওয়ামীলীগে আগামী দিনের শীর্ষ পদের প্রত্যাশী হিসেবে মনোভাব দেখিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি নিজেদেরকে নায়াণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগে রথী মহারথী নেতা দাবি করছেন।