রোববার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

রেল লাইনে চাঁদা তোলে কারা

ইউসুফ আলী এটম

প্রকাশিত: ১০ অক্টোবর ২০২৩  

 

একদার কোলাহলমুখর নারায়ণগঞ্জ রেল স্টেশন এখন নিষ্প্রাণ নিস্তব্ধ। গোটা স্টেশনে বিরাজ করছে সুনসান নীরবতা। স্টেশনটির অস্তিত্ব নেই প্রায় ৫ বছর ধরে। সেই ব্রিটিশ আমলে শিল্প ও বাণিজ্য নগরী নারায়ণগঞ্জের খরস্রোতা শীতলক্ষ্যার তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা রেল স্টেশনটি এখন শুধুই স্মৃতি।

 

ইতোমধ্যেই স্টেশনের যাবতীয় অবয়ব ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। থেমে গেছে কুলির হাঁকডাক, হকারের চেঁচামিচি এবং ভিক্ষুকের ছুটোছুটি। যাত্রীদের নিয়ে ট্রেনটি স্টেশনে আসা মাত্র কিংবা যাত্রীভর্তি ট্রেন দূর গন্তব্যে ছেড়ে যাওয়ার আগপর্যন্ত গোটা এলাকায় ছন্দময় একটা গমগম শব্দ ছড়িয়ে পড়তো। সে সময় যারা এ দৃশ্য দেখেছেন কেবল তারাই এর গভীরতা উপলব্ধি করতে পারবেন। একসময় এই স্টেশন থেকেই দূরপাল্লার সব ট্রেন আসা-যাওয়া করতো।

 

এই সরকারের আমলে রেল পরিবহনকে আধুনিকায়ন করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়। এর অংশ হিসেবে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেল লাইনকে ডাবল লাইন ও স্টেশনকে নতুন অবয়ব দেয়ার কর্মযজ্ঞ শুরু হয়। কিন্তু নানামুখি কারণে বার বার কাজ বন্ধ করে দেয়ায় পরিকল্পনাটি মাঝপথে হোঁচট খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। সহসাই কাজ শুরু করার তেমন কোন লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। 

 

এখন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে মাত্র দু’টো ট্রেন অতিরিক্ত ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করে। তাও আবার কমলাপুর থেকে পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ দেয়ার জন্য কয়েকমাস এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিলো। আর ওই সময়টায় ১ নং থেকে ২ নং রেলগেট পর্যন্ত রেললাইনের উপর দোকানপাটের পসরা সাজাতে সহায়তা করে সরকারি দলের চাঁদাবাজ চক্র।

 

রেলকর্মচারী ও পুলিশের কিছু অসাধু সদস্যকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে কিছু চিহ্নিত চাঁদাবাজ দোকান বসিয়ে তাদের কাছ থেকে নিয়মিত মোটা অংকের চাঁদা উঠায় বলে অভিযোগ রয়েছে। রেল চলাচল শুরু হওয়ার পরও বিপদজ্জনক অবস্থায় রেল লাইনের উপর দোকান বসাচ্ছে ওই চক্রটি। এতে যে কোন সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

 

ইতোমধ্যেই উক্ত স্থানে ছোট খাটো দু’একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেছে বলেও কয়েকজন দোকানদার জানিয়েছেন। দুর্ঘটনার পর চাঁদাবাজ চক্রটির কাউকেই অকুস্থলে দেখা যায়নি। কিন্তু চাঁদা তোলার সময় সে কী তর্জনগর্জন! নিজের পরিচয় জাহির করে বলেন তিনি সরকারি দলের অমুক-তমুক। চাঁদা না দিলে লাত্থি দিয়ে দোকান ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দিতেও দেরি করে না। প্রশাসনের ছিঁচকে সদস্য যারা এদের কাছ থেকে চাঁদার ভাগ নেন, তারা নিশ্চয়ই তাদেরকে চেনেন। এস.এ/জেসি 

এই বিভাগের আরো খবর