লাঙ্গলবন্দে দুদিনব্যাপী মহাষ্টমী স্নানোৎসব শুরু
যুগের চিন্তা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২৫ পিএম
হিন্দু ধর্মালম্বীদের দুদিনব্যাপী মহাষ্টমী পুণ্যস্নান উৎসব শুরু। গতকাল সোমবার ১৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দের আদি ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে এ স্নানোৎসব পালন হবে। পুণ্যস্নানের লগ্ন শুরু হবে সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে। আর শেষ হবে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ৫৬ মিনিটে। এ দিন ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল ও ভুটানসহ দেশি বিদেশি কয়েক লাখ পুণ্যার্থী স্নানোৎসবে মেতে উঠবেন।
এবার লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পাদন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা পুলিশ। লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী স্নান উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা যায়, এবার ২০টি স্নান ঘাট পুণ্যার্থীদের জন্য সংস্কার করা হয়েছে। বিশুদ্ধ খাবারের জল সরবরাহের জন্য ১৬টি নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। বিপুলসংখ্যক কাপড় পরিবর্তন কক্ষ ও ১৫০টি অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ করেছে জেলা প্রশাসন, এ ছাড়া নদের কচুরিপানা অপসারণ করা হয়েছে।
চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, ৫টি মেডিকেল টিম ও ১০ শয্যাবিশিষ্ট অস্থায়ী হাসপাতালের ব্যবস্থা করেছে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিস। সেই সঙ্গে স্নানে আসা দর্শনার্থীদের সেবা নিশ্চিতে বেসরকারিভাবে ৬০টি সেবাক্যাম্প ও ৪০০ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবে। এ ছাড়া পুরো ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১০০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে নৌপুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ উৎসব ঘিরে কাজ করছে। এবারও স্নানোৎসব ঘিরে রাস্তার দুপাশেই বসবে লোকজ মেলা। যেসব ঘাটে পুণ্যার্থীরা স্নান করতে পারবেন সেগুলো হলো- ললিত সাধুর ঘাট, নাসিম ওসমান কেন্দ্রীয় স্নানঘাট, গৌর বিষ্ণুপ্রিয়া স্নানঘাট, জাতীয় হিন্দু সমাজ সংস্কার সমিতি স্নানঘাট, অন্নপূর্ণা স্নানঘাট, লাঙ্গলবন্দ রাজঘাট, মাকরী সাধুর শান্তি আশ্রম স্নানঘাট।
গান্ধী ঘাট বা মহাশ্মশান স্নানঘাট, বরদেশ্বরী কালী ও শিব মন্দির স্নানঘাট, জয়কালী মন্দির স্নানঘাট, রক্ষা কালীমন্দির স্নানঘাট, পাষান কালীমন্দির স্নানঘাট, স্বামী দ্বিগিজয় ব্রক্ষচারী আশ্রম প্রেমতলা, শ্রী রামপুর জগদ্বন্ধু স্নান ঘাট (ব্রক্ষা মন্দির), দক্ষিণেশ্বরী কালী মন্দির স্নানঘাট,পরেশ মাহাত্মা আশ্রম স্নানঘাট, সাব্দী রক্ষা কালীমন্দির স্নানঘাট, সাব্দী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম স্নান ঘাট ও পঞ্চ পান্ডব স্নানঘাট (কালীগঞ্জ ঘাট) ও শ্রী প্রভুপাদ স্নানঘাট।
জানা যায়, ব্রহ্মপুত্রের জলের মাধ্যমে পাপমুক্ত হয়েছিলেন বিষ্ণুর অবতার পরশুরাম মুনি। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, মহাভারতের বর্ণনামতে পরশুরামমুনি পাপমুক্তির জন্য ব্রহ্মপুত্র নদে যে স্থানের জলে স্নান করেছিলেন, তা লাঙ্গলবন্দে অবস্থিত।
সেই থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস এ সময়ে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান খুবই পুণ্যের। এ স্নানের ফলে ব্রহ্মার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যমে পাপমোচন হয়। এ বিশ্বাস নিয়ে সুদীর্ঘকাল ধরে পরশুরামের পাপ থেকে মুক্তি হওয়ার কথা স্মরণ করে শত শত বছর ধরে লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে অষ্টমী স্নান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এন. হুসেইন রনী /জেসি