শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৭ ১৪৩১

শীঘ্রই সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে না.গঞ্জ রাইফেল ক্লাব

লতিফ রানা

প্রকাশিত: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪  

# খুব শীঘ্রই রাইফেল ক্লাব এখান থেকে সরানো হবে : জেলা প্রশাসক
# জনগণের প্রয়োজনে এখান থেকে সরিয়ে ফেলা জরুরী : রফিউর রাব্বি
# এগুলো সরিয়ে নিলে নারায়ণগঞ্জবাসী যানজট থেকে মুক্তি পেতে পারে : মাহবুবুর রহমান মাসুম

 

নারায়ণগঞ্জবাসীর ভোগান্তি বা দুর্ভোগের আরেক নাম যানজট। আর এই যানজটের মূল কারণ হলো শিল্প ও বাণিজ্য সমৃদ্ধ এই জেলার ব্যস্ততম শহরে যানবাহন চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় রাস্তার অভাব। যেখানে দৈনিক কয়েক লক্ষ লোকের চলাচল, সেই ছোট্ট কিন্তু ব্যস্ততম শহরের যানবাহনের জন্য একটি মাত্র রাস্তা এবং এর প্রবেশ ও বের হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট চাষাঢ়া। সম্প্রতি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের সংযোগ সড়ক লিংক রোডটি সংস্কার করার মাধ্যমে ১৩০ ফুটের মতো প্রশস্ত করার কাজ শেষ পর্যায়ে। তবে বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন মহল থেকে চাষাঢ়ায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাব ও বাইতুল আমান ভবনটি এখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহলের মতে এই প্রশস্তকরণ কোন কাজেই আসবে না যদি, লিংক ও চাষাঢ়া সড়কের সংযোগ স্থল প্রশস্ত করা না হয়। আর এই প্রশস্তকরণের একমাত্র বাধা লিংক রোডের পূর্ব পাশে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ রাইফেল ক্লাব ও পশ্চিম পাশে অবস্থিত বাইতুল আমান ভবন। তাই নারায়ণগঞ্জবাসীর বৃহত্তর স্বার্থে খুবই শীঘ্রই এই দুটি স্থাপনা ভেঙ্গে শহরের অন্যতম এই এক্সিট ও এন্ট্রি পয়েন্টের প্রশস্ত বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।

নারায়ণগঞ্জের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বিয যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘রাইফেল ক্লাব আজকের না, এটা বহু দিনের। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এখান থেকে জনবিরোধী বহু কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে। যদিও স্বাধীনতার আগে এই রাইফেল ক্লাব অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু বিগত সময়ে এই রাইফেল ক্লাবে কলংকজনক কতগুলো ঘটনার সাথে জড়িত আছে। বিশেষ করে শামীম ওসমান এই ক্লাবকে নিজের অফিস বানাতে গিয়ে গণবিরোধী বহু কার্যক্রম এখান থেকে পরিচালিত করেছে। আমরা ৫ আগস্টের পরে দেখেছি এই রাইফেল ক্লাবে সেনাবাহিনীর একটি ব্যানার ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই জায়গা সেনাবাহিনীর সেটা আমরা জানি। তবে রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য এখানে রাস্তার পাশের এই রাইফেল ক্লাব এবং অপরদিকের বাইতুল আমান ভবনটা অপসারণ করাটা জরুরী। এখন বাইতুল আমান সম্পর্কে বহু বিষয় কথা হয়েছে। ১৯৬৪ সালে এটা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে, এটার মালিকানা আসলে ওসমান পরিবারের না, সরকারের মালিকানা। এটি সেই সময়ই অপসারণ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এখন জনগণের প্রয়োজনে রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য এই দুটি জায়গা এখান থেকে সরিয়ে ফেলাটা খুব জরুরী। রাস্তার জন্য যতটা দরকার ততটাই করা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে সিনিয়র আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক নেতা মাহবুবুর রহমান মাসুম যুগের চিন্তাকে বলেন, আমি দাবি করি রাইফেল ক্লাব এবং বাইতুল আমান এই দুইটাই ভেঙে ফেলে রাস্তা প্রশস্ত করা হোক। ইউটার্ন করে রাস্তাটি বড় করা হোক। শুধুমাত্র রাইফেল ক্লাব ভাঙ্গা হলে আমরা রাস্তাটি কিছুটা বড় করতে পারবো। কিন্তু অপরপাশের বাইতুল আমানের জন্য এটা পারবো না। আমার মতে, প্রশাসন ও সড়ক ও জনপথের উদ্যোগে এই দুটি স্থাপনা ভেঙ্গে অবিলম্বে এই সড়কটি প্রশস্ত করা হোক। এই পয়েন্টটি হলো সংযোগের মুখ, তাই এই জায়গাটি সড়কের চেয়েও বেশি প্রশস্ত করা প্রয়োজন। আওয়ামী লীগ যেভাবে হাইলাইট করেছে যে, এখান থেকে আওয়ামী লীগের সৃষ্টি হয়েছে, তা ঠিক নয়, এখানে অনেক মিটিং ও আলোচনা হয়েছে। এর আগে সড়ক ও জনপথ এর কিছু অংশ একবার ভেঙ্গে ছিল। পরে হাইকোর্টের একটি স্টে-অর্ডারে বিষয়টি আটকে যায়। এখন রাস্তা যেহেতু প্রশস্ত হচ্ছে, তাই এই দুটি স্থাপনা সরিয়ে নিলে নারায়ণগঞ্জবাসী যানজট থেকে মুক্তি পেতে পারে।
 
 এই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক যুগের চিন্তাকে বলেন, ‘এখান থেকে রাইফেল ক্লাব সরিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ চলছে। জায়গাটাতো সেনাবাহিনীর, তাই সড়ক বিভাগের একটি জায়গা আমরা সেনাবাহিনীকে দিচ্ছি। খুব শীঘ্রই রাইফেল ক্লাব এখান থেকে সরানো হবে, এখানে রাস্তা হবে। খুব শীঘ্রই নারায়ণগঞ্জবাসী এর ফলাফল দেখতে পাবে।’

এই বিভাগের আরো খবর