রোববার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৮ ১৪৩১

সাড়ে ৫ বছর পর পূর্ণাঙ্গ হতে যাচ্ছে যুবদলের কমিটি

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২২ ডিসেম্বর ২০২৪  

দীর্ঘ সাড়ে ৫ বছর পর যুবদলের রাজনীতিকে শক্তিশালী ও সাংগঠনিকভাবে গতিশীলের মাধ্যমে বিগত আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথ কাপাঁনো পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়নের লক্ষে আসছে জেলা ও মহানগর যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। যাকে ঘিরে অনেকটাই উলাসিত হয়ে উঠেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। আলোচনা শোনা যাচ্ছে, চলতি মাসেই বা বছরের শুরুর সপ্তাহে প্রকাশ পাচ্ছে যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। ইতিমধ্যে সংগঠনটিক আহ্বায়ক, সদস্য সচিব, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়কের সমন্বয়ে কেন্দ্রে পূর্ণাঙ্গ কমিটি খসড়া জমা দেওয়া হয়েছে। এদিকে এর আগে পৃথক পৃথক দুইটি কমিটি গঠনে মূল্যায়িত হয়নি যুবদলের নেতাকর্মীরা। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৫ এপ্রিল মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সভাপতি ও মমতাজ উদ্দিন মন্তুকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর যুবদলের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিলো। একই সাথে ২০১৯ সালের ২৩ মার্চ শহিদুল ইসলাম টিটুকে সভাপতি ও গোলাম ফারুক খোকনকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা যুবদলের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্র। পরবর্তীতে জেলা ও মহানগর যুবদলের কমিটি ভেঙ্গে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হলে ও দীর্ঘ ৩ বছর এভাবেই চলতি থাকে যুবদলের রাজনীতি। কিন্তু সর্বশেষ সেই কমিটি ভেঙে জেলা ও মহানগর যুবদলের আস্থার কমিটি দিলে সেটা ও প্রায় দেড় বছর পর দিতে যাচ্ছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি। এদিকে বিগত দিনের মতোই এবার ও কমিটি পূর্ণাঙ্গ হলে ও বিগত দিনের থেকে সদস্য কমিয়ে ৭১ সদস্য বা ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি হতে পারে বলছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। 

 

এ দিকে বিগত দিনে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দের এই ব্যর্থতা ও অবহেলার কারণে রাজনৈতিক পরিচয় পাননি যুবদলের শত শত নেতাকর্মী। এদিকে খোরশেদ-মন্তু কমিটি ৩ বছর দায়িত্বে থেকে কমিটি দিলে ও পরবর্তীতে মন্তু-সজল কমিটি ২ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন তারা নিজেদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ ও ইউনিট কমিটি গঠনে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। একই সাথে শহিদুল ইসলাম টিটু ও গোলাম ফারুক খোকনের নেতৃত্বেধীন জেলা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আসলে পরবর্তীতে গোলাম ফারুক খোকন ও মশিউর রহমান রনির নেতৃত্বে দীর্ঘদিন জেলা যুবদলের কমিটি থাকলে ও সেখানে দেখা যায়নি কোন প্রকারের পরিবর্তন। এছাড়া ইউনিট কমিটি ও পূর্নাঙ্গ কমিটির নামে অর্থ বাণিজ্যের নানা অভিযোগের কান্ডারী হয়েছিলেন বিত যুবদলের সেই নেতারা। যা নিয়ে সেন্ট্রাল পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের চিঠি পৌঁছেছে।  যাকে ঘিরে সর্বশেষ বর্তমামে মহানগর যুবদলের ৩ সদস্য বিশিষ্ট সজল-শাহেদ-সাগর কমিটি একই সাথে জেলা যুবদলে সাদেকুর রহমান সাদেক, মশিউর রহমান রনি, খাইরুল ইসলাম সজীব ৩ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে কেন্দ্র। যে কমিটি প্রায় দেড় বছর পার হলে ও হয়নি শোনা যায়নি পূর্ণাঙ্গ বা ইউনিট কমিটি গঠনের কোন বার্তা। কিন্তু গত সেপ্টেম্বর মাসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারীর মধ্যেই নিজেদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ ও ইউনিট কমিটি গঠন করার জন্য সেই আলোতে ইতিমধ্যে মহানগর যুবদল নিজেদের সাংগঠনিক সকল কার্যক্রম শেষ করে নিজেদের কমিটি কেন্দ্রে জমা দিলে ও জেলা যুবদলের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা যায়। যাকে ঘিরে এখনো কমিটি গঠনে বসেনি নেতাকর্মীরা। এদিকে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে এদের মধ্যে দুইভাবে কেন্দ্রে পূর্ণাঙ্গ কমিটি খসড়া পরতে পারে।
 
সূত্রে মতে, গত বছরের ২৯ আগষ্ট আংশিক কমিটি গঠনের পর নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আওতায় রয়েছে সদর, বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও বন্দর উপজেলা ইউনিট। রয়েছে ৫ ইউনিয়ন এবং সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ড কমিটি। এতগুলো কমিটির মধ্যে মাত্র দু’টি ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা করেছে বর্তমান মহানগর কমিটির নেতারা। বাকি ইউনিটগুলোতে দীর্ঘদিন কোনো কমিটি নেই। একই দিনে জেলা যুবদলের আংশিক কমিটি গঠন হলে ও এখনো সংগঠনটির সদস্যরা এক চেয়ারে বসতে না পারায় এখনো হয়নি। এদিকে জেলা যুবদলের আওতাধীন ফতুল্লা থানা, সোনারগাঁ থানা, রূপগঞ্জ থানা, আড়াইহাজার থানাসহ ৫টি পৌরসভার কমিটি। একটির মধ্যে ও মূখ পরিবর্তনে আসেনি ইউনিট কমিটি। সেই আগের কমিটির মাধ্যমেই চলছে নেতাকর্মীরা। এছাড়া নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন দ্বন্দ্ব ও নিজেদের মধ্যে বিভেদ থাকায় যুবদলের কমিটিতে বারবার রদবদল হলেও পূর্ণাঙ্গ বা ইউনিট কমিটির পদ প্রত্যাশী নেতাকর্মীদের মনের আশা আর পূরণ হয় না বলছে নেতাকর্মীরা।
 
জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদকে সভাপতি, মমতাজ উদ্দিন মন্তুকে সাধারণ সম্পাদক, মনোয়ার হোসেন শোখনকে সহ-সভাপতি, সাগর প্রধানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রশিদুর রহমান রশোকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৫ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই আংশিক কমিটি ঘোষণার প্রায় ৫ মাস পর ২০১৯ সালের ৫ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেই কমিটি বিলুপ্ত করে যুবদল কেন্দ্রীয় সংসদ। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৬ নভেম্বর ঘোষণা করা হয়েছিলো নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সুপারফাইভ আহবায়ক কমিটি। মমতাজউদ্দিন মন্তুকে আহ্বায়ক আর মনিরুল ইসলাম সজলকে সদস্য সচিব করে ঘোষণার প্রায় ২ বছর এই ৫ জনেই আটকে ছিলো মহানগর যুবদল। এই সময়ের মধ্যে মহানগর যুবদল নিজেদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি, পারেনি কোনো ইউনিট কমিটিও ঘোষণা করতে। তারা শুধু কমিটি বাণিজ্যের মাধ্যমে উৎফুল্ল ছিলো তাদের নেতাকর্মীরা তাদের থেকে দূরে দূরে থাকতো তারা রাজপথে দেখাতে পারেনি কোন ভূমিকা। তা ছাড়া এই কমিটি গঠনের পর থেকে একের পর এক অভিযোগ ছিলো মহানগর যুবদলের বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে সেই কমিটি বিলুপ্ত করে গত ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট মনিরুল ইসলাম সজলকে আহ্বায়ক, সাগর প্রধানকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাহেদ আহমেদকে সদস্য সচিব করে ঘোষণা করা হয় মহানগর যুবদলের ৩ সদস্যের আহবায়ক কমিটি।


২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর শহিদুল ইসলাম টিটুকে আহ্বায়ক ও গোলাম ফারুক খোকনকে সদস্য সচিব করে জেলা যুবদলের ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হলে ৫ মাস পর ২০১৯ সালের ২৩ মার্চ শহিদুল ইসলাম টিটুকে সভাপতি ও গোলাম ফারুক খোকনকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালে সেই কমিটি ভেঙে গোলাম ফারুক খোনকে আহ্বায়ক ও মশিউর রহমান রনিকে সদস্য সচিব করে জেলা যুবদলের ৩ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হলে এর পর থেকে আটকে আসছে ইউনিট কমিটি ও নিজেদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার কার্যক্রম। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৯ আগষ্ট জেলা যুবদলের সেই কমিটি ভেঙে সাদেকুর রহমান সাদেককে আহ্বায়ক ও মশিউর রহমান রনিকে সদস্য সচিব, খাইরুল ইসলাম সজীবকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটি ও দেড় বছর অতিবাহিত করে ফেললো কিন্তু ইউনিট কমিটিগুলো গঠন করতে পারেনি। কিন্তু বর্তমানে মহানগর যুবদলের কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের আলোচনা সর্বশীর্ষে থাকলে ও জেলা যুবদলের কমিটি নিয়ে নেই কোন প্রকারের আলোচনা। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকেই।
 
এ বিষয়ে মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল যুগের চিন্তাকে বলেন, আমরা পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও ইউনিট কমিটি গঠনের জন্য নানা প্রক্রিয়া চালু করেছিলাম সেই অনুযায়ী ২টি ইউনিয়ন কমিটি ও গঠন করেছি। কিন্তু হঠাৎ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার আগে বিএনপি কঠোর আন্দোলন ঝাঁপিয়ে পরে সেই কারণে আমাদের কমিটি গঠনের পক্রিয়া অনকেটাই পিছিয়ে পরে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ৫ আগষ্টের পর আমাদের আর কোন বাধা নেই বতর্মানে আমরা মুক্ত। এদিকে গত মাসে আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্রুত পূর্ণাঙ্গ ও ইউনিট কমিটি গঠনে আলোচনা উঠে আসলে ও নির্দেশ দিলে সেই অনুপাতে আমরা আমাদের কার্যক্রম অবহৃত রেখেছি। আশা করছি শীগ্রই আমাদের কমিটি পূর্ণাঙ্গ হবে ও এর পরেই সকলের সমন্বয়ে দ্রুত ইউনিট কমিটিগুলো আমরা দিতে সক্ষম হবো।
 
জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি যুগের চিন্তাকে বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কার্যক্রম আমাদের অবহৃত রয়েছে। আশা করছি শীগ্রই আমরা যোগ্য নেতাকর্মীদের যাচাই-বাছাই করে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দিবো।
 

এই বিভাগের আরো খবর