শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৭ ১৪৩১

স্কুল পরিবর্তনে ছাড়পত্রের জন্য গুণতে হচ্ছে ২৭০০ টাকা

যুগের চিন্তা রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪  

 

নারায়ণগঞ্জে কাশিপুর ইউনিয়নের দেওভোগ হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয় চলতি বছরে স্কুল পরিবর্তনকারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ছাড়পত্র (প্রশংসাপত্র) বাবদ ২ হাজার ৭’শ টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে অত্র স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ন কবিরের বিরুদ্ধে।

 

বিশেষ করে ছাড়পত্র বাবদ সরকারি ফি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা না থাকার কারণে সেই সুযোগ নিচ্ছে স্কুলটি প্রধান শিক্ষক। তবে ছাড়পত্র বাবদ ২ হাজার ৭’শ টাকা নিচ্ছেন না বলে অস্বীকার করেন তিনি।

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যেসব শিক্ষার্থীরা হাজী উজির আলী স্কুল পরিবর্তন করে অন্য স্কুলে ভর্তি হচ্ছে সেসব শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ঐ স্কুল থেকে ছাড়পত্র আনতে গেলে প্রধান শিক্ষক ২ হাজার ৭’শ টাকা দাবি করেন।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, এই এলাকাতে তো এই একটাই স্কুল না আরো তো দুই-তিনটা স্কুল রয়েছে কিন্তু কই তারা তো ছাড়পত্র বাবদ এতো টাকা নিচ্ছে না। উজির আলী স্কুলের ছাড়পত্রের টাকাটা মাত্রাতিরিক্ত চাওয়া হচ্ছে।

 

এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রের মা যুগের চেন্তাকে বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে আমার ছেলে। বিক্রমপুর গ্রামে বাড়ি তুলছি। বর্তমানের শহরের পরিস্থিতি ভালো না। সব জিনিসের দাম বেশি। ওর বাবা যা রোজগার করে তা দিয়ে সংসারই চলে না বাড়ি ভাড়া দিবো কিভাবে। তাই এখান থেকে বিক্রমপুর গ্রামের বাড়ি চলে গেছি। এ কারনে ছেলেকেও সেখানে একটা স্কুলে ভর্ভি করবো বলে ছাড়পত্র নিতে এসে শুনি ২৭০০ টাকা লাগবে। স্যারদের জিজ্ঞাসা করে জানতে পারি ছাড়পত্রের সাথে বাকি টাকা নিচ্ছে সারা বছরের সেশন ফি হিসেবে। আমার কথা যেখানে আমার ছেলে এই স্কুলে আর কোনো কার্যক্রমে থাকবে না তাহলে কেন আমাকে পুরো বছরের টাকাটা তাদের দিতে হবে। এখানে সেশনের টাকা দিবো  আবার গ্রামের বাড়িতে ভর্তির সময় ফের সেশনের টাকা দিবো। মানে আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের তারা বলদ মনে করছে।

 

এ বিষয়ে দেওভোগ হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ন কবির যুগের চিস্তাকে বলেন, ম্যানেজিং কমিটি যে সিদ্ধান্ত নিবে অত্র স্কুলটি সেভাবেই চলে। আমাদের স্কুল থেকে সেসব শিক্ষার্থী ছাড়পত্র নিবে তাদেরকে সেশন ফি দিয়েই নিতে হবে। এরকমভাবে গত তিন বছর ধরে আমাদের স্কুলে নিয়ম চলে আসছে। আপনি নিয়ম না জানলে আমি কি করবো। সে যদি আমাকে সেশন ফি দিতে রাজি হয় এবং যে স্কুলে ভর্তি হবে সেই স্কুলে যদি ফের সেশন ফি দিয়ে ভর্তি হয় আপনার কোনো সমস্যা আছে। ২৭০০ টাকা দিয়ে ছাড়পত্র নিতে হবে এটা যদি আপনি আসেন বা এখন যে কেউ আসুক আমরা একই কথা বলবো। কারণ যে কোনো একটা স্কুলে তাকে সেশন ফি দিতে হবে। সে যদি আমার স্কুলে সেশন ফি দিয়ে ছাড়পত্র নিয়ে যায় তাহলে নতুন স্কুলে দিতে হবে না। এটাই সরকারি নিয়ম।   

 

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. ইউনুছ ফারুকী যুগের চিন্তাকে বলেন, প্রতিটি শ্রেণিতে প্রতি মাসে মাসিক বেতন যে পরিমান স্কুলে নেওয়া হয় সেই সমপরিমান টাকা ছাড়পত্রের জন্য নিতে পারবে। এখন হাজী উজির আলী স্কুলে সে ছাড়পত্র নিতে কেন সেশন ফি দিবে। এটাতে তো কোনো যুক্তি নাই। ঐ ছাত্র তো এই স্কুলে কোনো কার্যক্রমে থাকবে না তাহলে কেন তারা সেশন ফি নিবে। প্রধান শিক্ষকে দাবি তাদের স্কুলে সেশন ফি দিলে নতুন স্কুলে ভর্তির সময় সেশন ফি লাগবে না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, কি বলেন? কে বলছে এই কথা? নিবে না কেনো। ঐ বাচ্চা তো ঐ স্কুল সকল কার্যক্রমে অংশগ্রহন করবে আর সেশন ফি নিবে না। এটা কি হলো নাকি। এস.এ/জেসি    

এই বিভাগের আরো খবর