শনিবার   ২১ ডিসেম্বর ২০২৪   পৌষ ৭ ১৪৩১

সড়ক যেন মরণফাঁদ, ভোগান্তিতে যাত্রী ও গণপরিবহণ

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪  

 

বিভিন্নস্থানে বড় বড় গর্ত, জমে আছে পানি। উঠে গেছে রাস্তার পিচ ঢালাই, ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পাথর। এ যেন সড়ক নয়, মরণফাঁদ। টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে এ পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে শিমরাইল-আদমজী-চাষাঢ়া সড়কের সিদ্ধিরগঞ্জ অংশ। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে গণপরিবহণ ও যাত্রীরা।মাঝেমধ্যে ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।

 


মূলত সংস্কারের অভাবে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত সংস্কারহীন থাকায় পুরো সড়কজুড়ে ছোট ছোট খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সেই ক্ষত আরও বৃদ্ধি পেয়েছে টানা বৃষ্টিতে। আদমজী-চাষাঢ়া সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।

 


সড়কের বেহাল দশার কারণে দুর্ঘটনার শঙ্কা নিয়েই যাত্রীদের এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেকে সময় যাত্রীরা রিকশা থেকে পড়ে আহত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। ছোট-বড় গর্ত এড়িয়ে গণপরিবহনগুলোকে চলতে হচ্ছে এঁকেবেঁকে হেলেদুলে। যা চালকদের জন্যে অস্বস্তিকর। রোগী নিয়ে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা অনেকটা অসম্ভব।

 


সড়কটির পুরো অংশই কম বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। এর মধ্যে সড়কটির সিদ্ধিরগঞ্জ পুল, আদমজী ইপিজেড, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ও চৌধুরীবাড়ি অংশে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ইপিজেড অংশে থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয়ের সামনের সৃষ্ট গর্ত বেশ বড় আকার ধারণ করেছে। তাই সেখান দিয়ে ছোট-বড় যানবাহনগুলোকে পারাপারে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। এজন্য যানবাহনের ধীরগতির কারণে সৃষ্টি হয় যানজট। ভোগান্তি পোহাতে হয় জনসাধারণকে।

 


আদমজী-চাষাঢ়া সড়কটি সিদ্ধিরগঞ্জবাসীর জন্যে নারায়ণগঞ্জ শহরের যাতায়াতের অন্যতম প্রধান সড়ক। এখানে আদমজী ইপিজেড, ডিপিডিসির কার্যালয়, সিদ্ধিরগঞ্জ সাইলো, সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন, আদমজী ইপিজেড, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা, র‌্যাব-১১ এর সদর দপ্তর, সিদ্ধিরগঞ্জ টেলিফোন অফিস, পদ্মা ও মেঘনা ডিপোসহ সড়কের দুপাশে অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যেখানে মানুষজনের যাতায়াত তুলনামূলক বেশি।

 


জানা গেছে, বর্তমানে এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন গড়ে এক হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ শত শত বাস, ট্রাক, পণ্যসামগ্রী পরিবহণ ও তেলের লরী চলাচল করে। কিন্তু সড়কটি চলাচলের পুরো অযোগ্য হয়ে যাওয়ায় যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা করা হচ্ছে।

 


এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী কয়েকজন যাত্রী জানান, এই সড়কটি নারায়ণগঞ্জের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে থাকেন। এতো গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি এখন পর্যন্ত সংস্কার না করায় টানা বৃষ্টিতে পুরো সড়কটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।

 


কর্মজীবীদের কর্মস্থলে যাতায়াতে অনেক কষ্ট করতে হয়। তবে কবে নাগাদ এই কষ্টের অবসান ঘটবে তা জানা নেই তাদের। অতিদ্রুত সড়কটির সংস্কার দাবি করেছেন তারা।

 


অটোরিকশা চালক আলমগীর হোসেন বলেন, সড়কের দুরাবস্থার কারণে বড় বড় যানবাহনগুলো কোনোভাবে চলাচল করতে পারলেও তাদের অটোরিকশা নিয়ে এই সড়কে চলাচল করা অসাধ্য ব্যাপার। অধিকাংশ সময় অটোরিকশা হেলে যায়। এতে অনেক যাত্রী পড়ে আহত হচ্ছেন।

 


এক ট্রাকচালক জানান, সড়কটির অধিকাংশ স্থানেই কার্পেটিং উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তাই তাদের মালামাল নিয়ে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা অনেকটাই অসম্ভব হয়ে গেছে।

 


গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সংস্কারের ধীরগতি কারণ জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সহজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস জানান, খুব শিগগিরই শিমরাইল থেকে আদমজী এলাকা পর্যন্ত সড়কটির সংস্কার করা হবে। আমাদের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এখন শুধু বাজেটের অপেক্ষায় রয়েছি। বাজেট এলেই কাজ শুরু হয়ে যাবে। আমরা আপাতত আদমজী এলাকায় সৃষ্ট বড় বড় খানাখন্দ সাময়িক সময়ের জন্য সংস্কার করে দিচ্ছি।    এন. হুসেইন রনী  /জেসি

এই বিভাগের আরো খবর