স্টাফ রিপোর্টার (যুগের চিন্তা ২৪) : আর মাত্র কয়েকদিন। তারপরই মুসলামান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম উৎসব ঈদুল ফিতর। এরই মধ্যে ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে ঘরে ঘরে। কেনাকাটা নানা আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত ছোট-বড় সকলেই। আয়োজনে পিছিয়ে নেই যুগের চিন্তা পরিবারও। প্রতি ঈদের ন্যায় এবারো ঈদ আনন্দে ভাগ করে নিতে আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তাদেরই একজন বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি (সিপিবি) নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন রাসেল আদিত্য।
এবারের ঈদ প্রস্তুতি নিয়ে হাফিজুল ইসলাম জানান, প্রতি বছরই ঈদ আমি নারায়ণগঞ্জে করে থাকি। নারায়ণগঞ্জ শহর এবং আড়াইবহাজার গ্রাম মিলিয়ে। সকালে ঈদের জামাত আদায় করি আড়াই হাজারে আমার নির্বচনী এলাকায়। তারপর ওই অঞ্চলের লোকজন ও নেতা-কর্মী সবার সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করি। তারপর দুপুরে পরে আবার নারায়ণগঞ্জ চলে আসি।
তিনি বলেন, ঈদে আসলে ব্যক্তিগতভাবে কোনো কেনাকাটা নেই। তবে আমাদের প্রতিবেশী, আশেপাশের মানুষ তাদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি। আমাদের একটা পারিবারিক ঐতিহ্য আছে অর্থাৎ নারায়ণগঞ্জ, ফতুল্লা বা আড়াইহাজারে গরীব মানুষদের সাধ্যমত কাপড়-চোপড় বা টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করে থাকি। তাছাড়া পরিবারের সদস্যদের ও আত্মীয়-স্বজনদের জন্য সবাই যেভাবে করে আমিও সেভাবে কেনাকাটা করেছি।
ছোট বেলার ঈদ এবং বর্তমান সময়ের ইদের মধ্যে পার্থক্য সর্ম্পকে হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমি একদম স্কুল জীবন থেকেই ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকায় আমার ঈদ সবসময় ছিল সাধারণ মানুষের সাথে উৎসব করা, কুশল বিনিময় করা। তখন বড়রা সবাই সালামি দিত। সকালবেলা গোছল করে সালামি নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতাম। কোথায় কোথায় কত সালামি পাওয়া যাবে, মনে মনে তার একটা লিস্ট তৈরি করে দিতাম। তারপর আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে গেলে সালামি পেতাম। তখন নতুন টাকা সালামি পেতাম এবং কত টাকা পেতাম তা হিসাব করে রাখতাম এবং বারবার সেগুলোকে দেখতাম। সব মিলিয়ে খুব হৈ-হুল্লোরের সাথে ঈদের সারাদিন কাটাতাম। এখনতো আর সালামি পাইনা ! তো সালামি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। ছোটরা আছে পরিবারের লোকজন আছে তাদেরকে সালামি দিতে হয়।
ছোটবেলায় আমরা দল বেধে এবাড়ি ওবাড়ি যেতাম। এখন যান্ত্রিকযুগে আর এভাবে ছোটরা ঘোরাঘুরি করেনা। ঈদ এখন যার বাড়িরটা তার বাড়িতে করে। বাইরে একটু বেড় হয় ঘোরাঘুরি করে।
সবার উদ্দেশ্যে হাফিজুল ইসলাম বলেন, আমদের দেশের শ্রমজীবী মানুষ, গরীব মানুষ তাদের প্রধান উৎসবই হলো ঈদ উৎসব। তারা অন্য কেনো উৎসব করতে পারেনা। আমাদের সমাজে যারা বিত্তবান আছে তাদের উচিত এই উৎসব পালন করার জন্য সাহায্য করা। এই বিষয়টা আমাদের সবার খেয়াল রাখা উচিৎ। এখন যা অবস্থা সারা দেশের ১% মানুষ হলো সব অর্থের মালিক। তাই গরীব মানুষগুলো আরও গরীব হচ্ছে। তাদের বেঁচে থাকা খুব কষ্টের ব্যাপার। আমাদের সমাজে যারা বিত্তবান বা আমাদের মতো যাদের সুযোগ আছে তাদের উচিত এই গরীব মানুষকে এই উৎসবটা করার ব্যাপারে আমরা যেন সাধ্যমত সহযোগিতা করা। সমাজের এবং আমার আশে পাশের বিত্তবান মানুষের কাছে এটাই আমার প্রত্যাশা।